আর্সেনিক দূষণের সঙ্গে কম ওজন নিয়ে শিশু জন্মানোর সম্পর্ক আছে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা দেখেছেন, যে এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের পরিমাণ বেশি, সেসব এলাকায় জন্ম নেওয়া শিশুদের ওজন তুলনামূলকভাবে কম।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় শিকাগোর গবেষকেরা এই গবেষণা করেছেন। গবেষণা নিবন্ধটি এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গবেষকেরা বলেছেন, ব্যক্তিমালিকানাধীন নলকূপগুলোর পানিতে থাকা আর্সেনিকের পরিমাণ কমানো সম্ভব হলে তা বেশিসংখ্যক শিশুর পর্যাপ্ত ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করায় সাহায্য করবে। বলা হচ্ছে, আর্সেনিক নিয়ে এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম রোগতাত্ত্বিক গবেষণা।
আর্সেনিক প্রাকৃতিক উপাদান। প্রয়োজনের অতিরিক্ত আর্সেনিক বিষের সমান। আর্সেনিক দূষিত পানি পান, খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করার সময় বা কৃষি উৎপাদনের জন্য সেচে সেই পানি ব্যবহার করলে আর্সেনিক মানুষের শরীরে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সরবরাহব্যবস্থার পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানাধীন পানির উৎসগুলো নজরদারির বাইরে। দেশটির ১৪ শতাংশ মানুষ ব্যক্তিমালিকানাধীন উৎস থেকে পানি ব্যবহার করে। সেই কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এ বিষয়ে সমন্বিত তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি আছে।
বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় আর্সেনিকের দূষণ আছে। এক দশক আগেও বলা হতো, আর্সেনিক দূষণ বাংলাদেশের অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশের বিপুলসংখ্যক নলকূপের পানিতে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিক শনাক্ত হয়। সমস্যাটি অনেকটা কমে এলেও তা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। অন্যদিকে দেশে কম ওজন নিয়ে শিশু জন্মানোর হারও অনেক বেশি।
পরিসংখ্যান ব্যুরো ও জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের তথ্য বলছে, প্রতি ১০০টি শিশুর মধ্যে ২৩টি শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মায়। আর্সেনিক দূষণ ও শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা বাংলাদেশে হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, দূষণের শিকার শিশুদের বিকাশ তুলনামূলকভাবে কম হয়।