বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের ভ্রান্তনীতি

দেশ রূপান্তর চিররঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২২, ০৯:১৩

বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে বিদ্যুৎ ও তেলের খরচ কমানোর একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ডিজেলের দাম ‘আকাশচুম্বী’ হয়ে যাওয়ায় আপাতত দেশের ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন স্থগিত রাখা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেই ঘাটতি সমন্বয় করতে গ্রাহক পর্যায়ে দিনে এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। জ্বালানি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অনির্ভরযোগ্য পণ্য। এর দর একই রকম থাকবে, তা কখনোই দেখা যায়নি। কিন্তু সরকার থেকে গেছে ঝুঁকিপূর্ণ আমদানির ভরসাতেই। ফলে যখন বিশ্বব্যাপী গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে, তখন আর কম দামে এলএনজি পাচ্ছে না বাংলাদেশ। এতেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের অভিজ্ঞতা নিতে হচ্ছে সারা দেশের মানুষকে, ব্যাহত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন। মূলত গত এক যুগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার যতটা মনোযোগ দিয়েছে, এর কাঁচামাল সরবরাহের দিকে তেমন নজরই দেয়নি।


গ্যাসের অভাবের কারণে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন ক্ষমতার পুরোপুরি ব্যবহার করা হয়নি। সে তুলনায়, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে সরকার গ্যাস সরবরাহ করছে প্রায় ৩০% বেশি। যা ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা দেওয়ার একটি নকশা বলেও মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। সরকার গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে সংস্কারের পথে আর যায়নি। গ্যাস অনুসন্ধানেরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো কিছু ব্যবসায়ীর পরামর্শে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু করে। এভাবেই জ্বালানি খাতকে প্রায় পুরোপুরি আমদানিনির্ভর করা হয়, যা ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে অনেক সমালোচনা ও লেখালেখি হলেও সরকার কর্ণপাত করেনি। বরং সরকার সব পরিকল্পনা সাজায় আমাদানি করা এলএনজি নিয়ে। এ জন্য টার্মিনাল নির্মাণ ও পাইপলাইন তৈরিতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।


দেশে এখন দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৭০ কোটি ঘনফুট। সাধারণত গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুটের মতো সরবরাহ করা হয়। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ক্রমান্বয়ে এর সরবরাহ কমানো হচ্ছে। দেশে যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হয়, তার একটি বড় অংশ ব্যবহার করা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। শিল্পকারখানায়ও বিপুল পরিমাণ গ্যাস লাগে। বিশ্বব্যাপী যে মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে, তার মূল কারণ গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। গত এক বছরে কেবল ইউরোপের বাজারেই গ্যাসের দর বেড়েছে ৭০০ শতাংশ, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।


কভিড-১৯ এর কারণে এমনিতেই পণ্যমূল্য বাড়ছিল। কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে সেই সংকট আরও প্রকট হয়েছে। বিশেষ করে গ্যাসের জন্য ইউরোপের প্রায় পুরোটাই নির্ভর করে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর। গ্যাস সংকট এখন কেবল ইউরোপে আর সীমাবদ্ধ নেই। সম্প্রতি এশিয়ায় গ্যাসের দর বেড়েছে ৬০ শতাংশ। ফলে এলএনজির দাম বাড়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিদ্যুৎ নিয়ে সংকটে পড়ে গেছে। মিয়ানমার এলএনজি কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। পাকিস্তান বিদ্যুৎ খাতে বড় ধরনের রেশনিংয়ের দিকে গেছে। চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড এলএনজি কেনা কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশকেও যেতে হয়েছে একই পথে। মূলত সরকারের ভ্রান্তনীতির ফলে বর্তমান সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার তিনটি ভুল করেছে গ্যাস খাতে। গ্যাসের উৎপাদন কমার প্রক্ষেপণ ছিল পেট্রোবাংলার, কিন্তু গ্যাস অনুসন্ধান করা হয়নি। অথচ সারা বিশ্ব এটাই করে, এটাই নিয়ম। এখন তড়িঘড়ি করছে। উৎপাদন না বাড়িয়ে ২০১৮ থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করে সরকার। এখন ৪০ ডলার দাম এলএনজির। যেখানে দেশীয় গ্যাসের খরচ এক ডলারের কম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

রাজধানীতে আজ কখন কোথায় লোডশেডিং

জাগো নিউজ ২৪ | ঢাকা মেট্রোপলিটন
১ বছর, ৬ মাস আগে

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us