‘হাত থাকতে মুখে কেন’

প্রথম আলো গওহার নঈম ওয়ারা প্রকাশিত: ২৭ জুলাই ২০২২, ১৬:১৪

‘মানুষ ও মানুষ, দুডো কান আর দুডো চোখ/ দেখপা আর শুনবা/ কিন্তু একটা মুক! তো কথা কম কবা...তোমার মেলা ঝামেলা কমে যাবে/ একটু চুপ করে থাকপা…’


গুরুপদ গুপ্তর কথায় আর সুরে লোকসংগীত ঘরানার এই গান ‘মানুষ ও মানুষ’ একসময় বেশ মনে ধরেছিল নগরহীন নাগরিকদের। গানে কবি বারবার কম কথা বলার অনুরোধ করেছেন। তাঁর সহজিয়া যুক্তিতে দুটি করে কান-চোখ থাকলেও মুখ যখন একটা, তখন কথা কম বলাই উচিত। তাতে ঝামেলা কমে যাবে। লোকসংগীতের মর্মকথা আর লেখা কথার মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকে। গুরুপদ গুপ্তর এই গান এর ব্যতিক্রম নয়। যাঁরা ঝুটঝামেলা এড়াতে চান, তাঁদের জন্য গুরুপদ গুপ্তর বাণী ঠিক আছে। কিন্তু যাঁদের ঝামেলা পছন্দ বা শর্টকাটে ঝামেলা শেষ করতে চান, তাঁদের বিধান ভিন্ন। তাঁরা আজকাল একেবারেই কথা কম বলছেন, বলতে গেলে মূক থাকছেন, কিন্তু হাত-পা বাঙ্‌ময় করে তুলছেন। মুখকে পূর্ণ অবসরে পাঠিয়ে হাত-পা দিয়ে পিটিয়ে, কিল-ঘুষি-লাথি দিয়ে উতরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।


সব স্কুলেই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ঘটা করে বিদায় জানানোর একটা রেওয়াজ আছে। সেদিন তাদের তোয়াজ করে বসানো হয়। প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীরা তাদের প্রশংসা করে, শুভকামনা করে। কান্নাকাটি, মাফ চাওয়াচাওয়ি, শিক্ষকদের সঙ্গে একটা গ্রুপ ছবি, অল্পবিস্তর খাওয়াদাওয়া—এসব দিয়েই দিনটি শেষ হয়। এ রকম একটা দিনে রাজধানীর একটা স্কুলে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের ওপর বাঁশ নিয়ে চড়াও হয়েছিলেন সেই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। বেধড়ক পিটিয়ে কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। পরে পুলিশ এসে প্রধান শিক্ষককে থানায় নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এমন গোল বাধার কারণ নিয়ে নানা মত শোনা গেছে। কেউ বলছেন তবারক বিতরণ নিয়ে ‘কাইজ্যা’র সৃষ্টি। ছেলেরা আগে পাবে, না মেয়েদের আগে দেওয়া হবে—সে প্রশ্নের সমাধান করতেই বলপ্রয়োগ-মারধর। কেউ বলছেন তবারক হিসেবে বিরিয়ানি বিতরণের কথা থাকলেও শুধু মিষ্টি বিতরণ করে কাজ সারতে চেয়েছিলেন স্কুলপ্রধান, তাতেই তেতে ওঠে পরিবেশ। কারণ যা-ই হোক, মারধর কেন হবে? কেন শিক্ষকের হাতের বাঁশ উঠবে শিক্ষার্থীদের গায়ে?


শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের মারপিট করবেন—এটা তাঁদের একটা অধিকার বলে মনে করেন অনেক অভিভাবক। এসব অভিভাবক বুক ফুলিয়েই বলেন, ‘আমার ওস্তাদ, আমার শিক্ষক আমাকে পিটিয়েই মানুষ করেছেন; অতএব পেটানোর লাইসেন্স আমরা উত্তরাধিকারসূত্রেই অর্জন করেছি। এসব নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাই বুরবুকি।’


বছর কয়েক আগে ঢাকায় ছাত্রদের শাস্তি প্রদানের ওপর এক গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আয়োজকেরা তাদের এক জরিপের ফলাফলের সূত্র দিয়ে জানায়, ৫৫ শতাংশ অভিভাবক মনে করছেন, স্কুলে শাস্তির মাধ্যমে শিশুকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যায়। আবার ২৭ শতাংশ অভিভাবক মনে করছেন, শাস্তি না হলে শিশুরা বখে যায় এবং ২৫ শতাংশের মতে, শাস্তি দিলে শিশুরা শিক্ষকদের কথা শোনে। আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ব্লাস্ট পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছে, ‘৬৯ শতাংশ মা-বাবা নিয়মানুবর্তিতার জন্য স্কুলে শিশুদের বেত্রাঘাতসহ শাস্তির বিধানের পক্ষে।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us