একটা অস্থির সময়ের ওপর দিয়ে যাচ্ছে দেশ। কোথাও ঝড় যখন ওঠে, মানুষের উচিত আশ্রয় নিয়ে পরবর্তী সময়ের জন্য অপেক্ষা করা। সবাই অপেক্ষা করছে, সব কিছু স্বাভাবিক হবে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে। দেশের রিজার্ভ আর নীচে নামবে না। রেমিট্যান্স বাড়বে। রপ্তানি আয় বাড়বে। টাকার মান আর কমবে না। যদিও ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরেকদফা ৫০ পয়সা কমেছে বৃহস্পতিবার। হয়তোএখানে ফুলস্টপ হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন বন্ধ হবে। ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ হবে। করোনায় আর কী ধাক্কা দিয়েছে, তার চেয়ে এখনকার ধাক্কা অনেক বড়। বিষয়টি এখন আর অপ্রকাশ্য নেই। তবে সরকার মানুষের অস্থিরতা টের পাচ্ছে। দেশের মনের কথা পড়তে পারছে। যে কারণে অনেকগুলো ত্বরিৎ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মন্ত্রী-আমলাদের কৃচ্ছতা সাধন করতে বলা হয়েছে। আট দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খরচ সামলাতে অফিস আদালতের কাজের রুটিন চেঞ্জ হচ্ছে।
তবে ঋণখেলাপিদের সুযোগ করে দেয়া বন্ধ হবে, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে কঠোর উদ্যোগ বা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে, বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি বন্ধ হবে, অপরিকল্পিত প্রকল্প ব্যয় সংকোচন করা হবে- এমন আরও আরও কিছু বিষয়ে ঘোষণা না আসায় মানুষ বুঝতে পারছে না একদিন সব কিছু ঠিক হবে কিনা। বিশেষ করে দেশের অর্থনীতির ভঙ্গুর মহাসড়ক।
মানুষ মনে করছে, সরকার বিশিষ্টজনদের কথা শুনবেন। সমস্যাগুলো একেবারে নিখুঁতভাবে চিহ্নিত করে সমাধানের পথ উন্মুক্ত করবে।
তবে সরকার যে বসে আছে তা নয়। মানুষের উদ্বেগ মানুষের উৎকণ্ঠা আমলে নিয়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও উদ্বেগের হলেও সেখান থেকেই উত্তরনের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক বা মন্ত্রী এমপির অতি কথনে ধোঁয়াশা তৈরি হয়।
সবার ধারণা,তারা বিশেষ করে মন্ত্রীসাবরা কথা কম বলে রাষ্ট্রের কাজ, মানুষের জন্য কাজ বেশি করবেন।
আইএমএফকে কোনো প্রকার অর্থ নেয়ার চিঠি পাঠাননি বলে মন্তব্য করে বুধবার অর্থমন্ত্রী বললেন, এই মুহূর্তে বিদেশি ঋণের প্রয়োজন নেই।
এর একদিন পর বৃহস্পতিবার তিনি বললেন, প্রয়োজন হলে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়া হবে।
এই যে একমুখে দুই কথা বা দিনের ব্যবধানে দুরকম কথা মানুষ শুনছে। এমন আরও অনেকে নানা কথা বলেন। যার যে দায়িত্ব তা বাদ দিয়ে অন্য বিষয় নিয়ে কথার খই ভাজেন অনেকে। তবে অর্থমন্ত্রী তাদের মতো নন। তিনি কেনো বিদেশি ঋণ নিয়ে দুরকম বললেন- বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাকে কী আরও দায়িত্বশীল অবস্থায় থেকে জাতিকে তথ্য জানানো দরকার নয়? এমন প্রশ্ন সচেতন নাগরিকদের।