খাতাকলমে কে কে সামছুদ্দিনের বয়স এখন ৯৮। যশোর শহরের পুরাতন কসবা বিবি রোড (মাদ্রাসা মহল্লা) এলাকায় থাকেন মেয়ের জামাই আবুল হোসেনের বাড়িতে। নামাজ, পবিত্র কোরআন আর বই পড়ে সময় কাটে তার।
বছরখানেক আগেও বেশ চটপটে ছিলেন সামছুদ্দিন। এখন বার্ধক্যে বেশ কাহিল। স্মরণশক্তিও কমে গেছে। কথা জড়িয়ে যায়। নাতির ছেলে বোরহানউদ্দিনই তার দেখাশোনা করেন।
শতবর্ষী সামছুদ্দিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীর সৈনিক ছিলেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার করেছেন দুর্বিষহ সময়। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্যে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে পেয়েছেন পদক। তবে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার সেসব পদক, যুদ্ধদিনের স্মারক ও ছবি— সবই নষ্ট করে দেয় পাকিস্তানি সেনারা। এমনটাই জানালেন সামছুদ্দিনের বড় ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা।
৮ জুলাই এই বীরযোদ্ধার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। বেশিরভাগ কথাই বোঝা যাচ্ছিল না। তবে আকারে-ইঙ্গিতে এবং অস্পষ্ট উচ্চারণে বোঝা গেলো অনেক কিছু।
যুদ্ধকালে খাকি পোশাক আর মাথায় পাগড়ি পরতেন সামছুদ্দিন। সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ লড়াই করেছেন। বশ্যতা স্বীকার করিয়ে ছেড়েছেন জাপানিদের। খাবারের কষ্ট ছিল বেশ। চালিয়েছেন মেশিনগান-স্টেনগান। জানালেন ভাঙা ভাঙা স্বরে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর পক্ষে লড়াই করা বাংলাদেশি (তৎকালীন পূর্ববাংলা) সৈন্যদের বীরত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ভূমধ্যসাগর, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রণাঙ্গনে অংশ নিয়েছেন তারা। রসদ সরবরাহ থেকে শুরু করে সম্মুখসমরেও বড় ভূমিকা রয়েছে তাদের।