বর্তমান অর্থনীতিতে ‘অর্থ পাচার’ একটি বহুল আলোচিত বিষয়। এটি প্রতিরোধ করতে রয়েছে নানা আইন-কানুন। রয়েছে বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা। প্রায় প্রতিটি দেশেই ‘অর্থ পাচার’ নিষিদ্ধ।
প্রথমেই আসি ‘অর্থ পাচার’ বলতে কী বোঝায়? অপরাধ থেকে উপার্জিত অর্থ ভিন্ন দেশে সহজে ব্যবহারের জন্য অবৈধ কোনো পন্থায় পাচার করে দেয়াই ‘অর্থ পাচার’ নামে অভিহিত। একে মানি লন্ডারিংও বলে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) অর্থ পাচারের পরিচয় দিয়েছে এভাবে—অর্থ পাচার হলো অপরাধ থেকে অর্জিত আয়কে বৈধ আচ্ছাদন দেয়ার প্রক্রিয়া। অপরাধ থেকে অর্জিত অর্থ পাচারের আগে তা ব্যবহার করা অপরাধীর জন্য সমস্যাজনক। কারণ সে তখন ব্যাখ্যা করতে পারে না, এ অর্থ কোত্থেকে এসেছে, কীভাবে উপার্জন হয়েছে। কিন্তু অর্থ পাচারের পর সেটি বৈধ তহবিল থেকে পৃথক করা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে সেটি কোনো ধরনের শনাক্তকরণ ছাড়াই অপরাধী তা ব্যবহার করতে পারে।
‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২’ (এটি ২০১২ সালের ৫নং আইন নামে পরিচিত) আইনের ধারা ২-এর ‘ক’-এ ‘অর্থ পাচার’-এর পরিচয় ও আওতা বলা হয়েছে এভাবে— ২ । বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এ আইনে (ক) ‘অর্থ বা সম্পত্তি পাচার’ অর্থ। (১) দেশে বিদ্যমান আইনের ব্যত্যয় ঘটাইয়া দেশের বাহিরে অর্থ বা সম্পত্তি প্রেরণ বা রক্ষণ; বা (২) দেশের বাহিরে যে অর্থ বা সম্পত্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রহিয়াছে যাহা বাংলাদেশে আনয়নযোগ্য ছিল তাহা বাংলাদেশে আনয়ন হইতে বিরত থাকা; বা (৩) বিদেশ হইতে প্রকৃত পাওনা দেশে আনয়ন না করা বা বিদেশে প্রকৃত দেনার অতিরিক্ত পরিশোধ করা।