পুরান ঢাকার বাহাদুরশাহ পার্ক এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় নিহত বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গত রোববার রাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় র্যাব-৩ এর একটি দল এ অভিযান চালায়। কামরুল দণ্ড মাথায় নিয়েই পালিয়ে থেকে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে জড়ান। এমনকি সেই টাকা দিয়ে কক্সবাজারে হোটেল ব্যবসা ছাড়াও চালিয়ে যাচ্ছিলেন গার্মেন্টস ব্যবসা।
গ্রেপ্তার কামরুল ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন।
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিরীহ-নির্দোষ ওই যুবককে দিনেদুপুরে নৃশংসভাবে এমন হত্যার দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছিল গোটা দেশ।
ঘটনার এক বছর পর ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার আদালত ৮ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে রায় দেন। নিম্ন আদালতে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, চারজনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন এবং অপর দুইজনকে খালাস দিয়ে ২০১৭ সালের ৬ আগস্টে রায় দেন হাইকোর্ট। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে আপিল করে দুই আসামি খালাস পান।
এরমধ্যে গত শুক্রবার বগুড়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে একই মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া মোহাম্মদ আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
র্যাব-৩ এর অপারেশন ও গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা বীণা রানী দাস জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার কামরুল জানিয়েছেন, ঘটনার দিন বিশ্বজিৎকে প্রতিপক্ষ দলের সদস্য ভেবে তাকে তারা ধাওয়া করেন। এরপর এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে গেলে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশে চলে যান। তবে মামলার চার্জশিট দাখিলের দুই মাস পর দেশে ফিরে আসেন।