এসএসসি পরীক্ষার ঠিক আগে আচমকাই ঘরে এল বানের পানি, শত চেষ্টাতেও রক্ষা হল না বই-খাতা; মাথায় আকাশ যেন ভেঙে পড়ল সুনামগঞ্জের তারেকুল হাসানের।
বসতভিটা ডুবে যাওয়ার সেই বিপদকালে ঘরের বেড়া আর টিনের চালও পানির তোড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ১২ দিন খাটের ওপর চৌকি তুলে কোনোমতে বেঁচে ফেরে জামালগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের পরিবারটি।
তবে ততদিনে বানের জল ভাসিয়ে নিয়েছে দরকারি নানা জিনিসপত্র; সঙ্গে গেছে বই-খাতা আর নোটও। প্রথম বড় পাবলিক পরীক্ষার আগে দুর্যোগের ঘনঘটায় অনিশ্চতার আঁধার ছেয়ে গেছে কিশোর ওই পরীক্ষার্থীর মনেও।
বিশ্বম্ভরপুর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী তারেকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলছিলেন, “আমার বই-খাতা পানিতে ভেসে গেছে। নোটখাতা নষ্ট হয়ে গেছে। বইগুলা বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করছি। এগুলা তো আমার আগামী দিনের ভবিষ্যত। তারপরও পারি নাই।”
ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের রেকর্ড বৃষ্টি গত মাসে চরম দুর্ভোগ নিয়ে আসে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ ওই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিদ্যুৎ সরবরাহও।
তারেকুলের ছোট বোন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী, তার বই-খাতাও নষ্ট হয়েছে। বন্যায় কৃষিজমি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কোনমতে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে এ কৃষি পরিবারকে। এর মধ্যে পড়ালেখায় মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য।