মূলত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল এড়িয়ে রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তি সহজ করতে এ পথে এগুতে চাচ্ছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)৷ আপাতত রাশিয়ার এতে কোনো আপত্তি নেই৷ আর অতীতে ভারতীয় রুপিতে বৈদেশিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তির অভিজ্ঞতা ভারতের আছে৷ যেমন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরানের সাথে রুপিতে কিছু লেনদেন হয়েছিল৷
তবে ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত একদম হঠাৎ করেই আসেনি৷ কিছুদিন ধরে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, শ্র্রীলঙ্কা, মিয়ানমার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত নিজেদের মুদ্রায় নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্যিক লেনদেন নিষ্পত্তির বিষয়টি নিয়ে কথা চালাচালি করছিল৷ মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরপরই কয়েকটি দেশ নিজস্ব মুদ্রায় বা তৃতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে৷ আর এই সক্রিয়তা আরেকটু বেড়েছে যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়ায়৷
বাংলাদেশেও এ নিয়ে কিছু আলাপ-আলোচনা হয়েছে৷ আর তা মূলত রাশিয়ার সাথে রুবলে বাণিজ্য সম্পন্ন করার সম্ভাব্যতা নিয়ে৷ তবে এ নিয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি আর হয়নি৷ তাতে বোঝা যায়, বাংলাদেশের মতো দেশের পক্ষে মার্কিন ডলারকে এড়িয়ে খুব সামান্য পরিমাণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি খুব কঠিন কাজ৷ আর তাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে শুরু করলেও তা মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মূল হাতিয়ার হলো আমদানি ব্যয়ে রাশ টানা৷ ইতিমধ্যে সেরকম কিছু পদক্ষেপও নেয়া হয়েছে যেন তুলনামূলক অপ্রয়োজনীয় বা বিলাসদ্রব্য আমদানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যায়৷ তারপরও গত অর্থবছরের ১১ মাসে আমদানি ব্যয় সাড়ে সাত হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা তার আগের বছরেরে একই সময়ের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি৷ আবার জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নেমে এসেছে চার হাজার কোটি ডলারের নীচে যা দিয়ে সাড়ে চার মাসের কম সময়ের পণ্য ও সেবাখাতের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব৷