চলমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংকটের কারণে কোন এলাকায় কত সময় লোডশেডিং দেওয়া হবে, তার একটি রুটিনের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লোডশেডিংয়ের বিষয়ে সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি। তাই আপাতত লোডশেডিং থেকে মুক্তি নেই। এসি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনা, সারা দেশে আলোকসজ্জা বন্ধ করাসহ সমস্যা সমাধানে নানা কথা বলা হচ্ছে। এখন দেশজুড়ে যে লোডশেডিং চলছে, তা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংকটসহ জ্বালানি খাতের নানা বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আনু মুহাম্মদ।
আনু মুহাম্মদ: কয়লা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎ করে বাংলাদেশ ভয়বাহতার দিকে যাচ্ছে। তেল, গ্যাস কমিটির পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে একটি বিকল্প মহাপরিকল্পনা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ২০ বছর ধরেই জাতীয় সক্ষমতা ও সার্বভৌম জ্বালানিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আমাদের মহাপরিকল্পনায়ও জাতীয় সক্ষমতার ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছিল। দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন বাড়িয়ে তা ব্যবহার করা আর জাতীয় সক্ষমতা ব্যবহার করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো—এ দুটো করেই সুলভে বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব। বিদেশ ও ঋণনির্ভরতা থাকত না।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর কথা ২০১৬ সালের মহাপরিকল্পনায়ও বলা হয়েছিল। ওইটা তেমন কাজের কিছু হয়নি। এবারও বলছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সনদে সই, প্যারিস চুক্তি মিলে একটা চাপ আছে। এ কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলছে সরকার। তবে বাস্তবে এটা কার্যকর করায় তেমন মনোযোগ নেই। তাদের প্রধান মনোযোগ কয়লা ও পারমাণবিকে। এ থেকে সরকার সরেনি।
বাংলাদেশে মূলত সিদ্ধান্ত হয় লবিস্টদের শক্তিমত্তার ওপর নির্ভর করে। কয়লা, পারমাণবিক ও এলএনজির লবি এখন সরকারের জ্বালানিনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এখানে জাতীয় স্বার্থ বা টেকসই উন্নয়নের ধারণা সরকারকে প্রভাবিত করতে পারছে না। তারা প্রভাবিত হচ্ছে লবিস্টদের মাধ্যমে। এখানেই সমস্যা হচ্ছে।