মতিন সাহেবকে আজ খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে। চায়ের কাপটা সামনে ১০মিনিট ধরে পড়ে আছে, কাপ থেকে ধোঁয়া উঠছে। সেদিকে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, তিনি তাকিয়ে আছেন চায়ের কাপের পাশে পড়ে থাকা মোটরসাইকেল এর চাবিটার দিকে। প্রায় ৬ মাস হল তিনি আর মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন না। মোটরসাইকেলটা তার খুব শখের ছিল। প্রতিদিন অফিসে যাওয়া আসা, মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, বাসার টুকি-টাকি কত কিছুর সঙ্গী ছিল এই মোটরসাইকেল।
মাঝে মাঝে তার ছোট ভাই রাশেদ প্রায়ই চালাত এই মোটরসাইকেল। কিন্তু একদিন কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় আচমকা কেন যেন পেছনের চাকা পিছলে গেল আর সেও রাস্তায় পড়ে যায়। ব্যাপারটা খুব একটা সিরিয়াস ছিল না কারণ মোটরসাইকেল যারা চালায় তাদের এরকম দু একবার রাস্তায় পিছলে পড়ে যাবার অভিজ্ঞতা থাকে। কিন্তু রাশেদের ভাগ্য এতটা ভালো ছিল না, কারণ মোটরসাইকেলের পেছনেই ছিল একটি বাস আর তা সরাসরি চলে যায় রাশেদের মাথার উপর দিয়ে। মোটরসাইকেল এর সাথে পাওয়া হেলমেটটা এত বেশি শক্তিশালী ছিল না যে, তা প্রায় ৪ টন ওজনের বাসের চাপ নিতে পারবে। রাশেদের শরীরের আর কোথাও তেমন কোন আঘাত ছিল না। সেদিন মতিন সাহেব বুঝতে পারল যে, মোটরসাইকেল খুব ঝুঁকিপূর্ণ একটা বাহন। কারণ আজ যদি তার ভাই অন্য কোন চার চাকার বাহন বা তিন চাকার অটোরিকশাতেও থাকত তাহলে সেই গর্তে পড়ে কখনই রাস্তায় পড়ে যেত না, বড়জোর একটা ঝাঁকি খেত। কিন্তু দুই চাকার অল্প প্রস্থ চাকা এই ঝাঁকি সামলাতে পারল না।