দিনক্ষণ ঠিক ছিল। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। খসড়াও চূড়ান্ত। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁকে বসায় তিস্তা চুক্তি আর সই করতে পারেনি ভারত। ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ওই বাংলাদেশ সফরে তিস্তা চুক্তি যে আটক গেল, তা ১১ বছরেও সমাধা করতে পারেনি দেশটি। এমনকি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও আশ্বাস দিয়ে তা রক্ষা করতে পারেননি।
বাংলাদেশ তরফে সর্বশেষ ১৯ জুন তিস্তা পানিবণ্টন সমস্যা সমাধানের অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় প্ল্যাটফর্ম যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
তিনি বাংলাদেশ পক্ষকে অনুরোধ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে। তাঁকে রাজি করাতে।
তিস্তা প্রসঙ্গ জেসিসির বৈঠকে এসেছে কি না, জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের এক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘আমাদের বলা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন গলাতে, তাঁর সঙ্গে কথা বলতে।’ বাংলাদেশের জবাব কী ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, মমতার দিকটি ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন শুধু দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেই বাংলাদেশ আলোচনা করবে।
এ বিষয়ে এর আগে দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ কয়েক দফা অনুরোধ করলেও ভারত সাড়া দেয়নি বলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের ভারতের অনুরোধ ‘একটি রাজনৈতিক চাল’। তিনি বলেন, তিস্তা নদীটি নেমেছে ভারতের সিকিম হয়ে। সেখানে সিকিম অন্তত ৩০টি ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। তিস্তা বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপদেষ্টা কল্যাণ রুদ্রের নেতৃত্বে একটি সমীক্ষা হয়েছিল। রুদ্র (ইমতিয়াজকে) বলেছেন, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পশ্চিমবঙ্গেই জল থাকে না। বাংলাদেশকে দেবে কোত্থেকে।