থ্যালাসেমিয়া হচ্ছে পৃথিবীতে সর্বাপেক্ষা বেশি হারে দেখা যাওয়া জেনেটিক রোগ। বলা হয়, বাংলাদেশে বিশাল এক জনগোষ্ঠী থ্যালাসেমিয়ার বাহক। বিস্তারিত জানাচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী।
রোগের ধরন
এটি বংশগত রক্তরোগ। রক্তের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো হিমোগ্লোবিন।
জেনেটিক কারণে যখন শরীরে স্বাভাবিক হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না, তখন শিশু এরূপ অসুখে ভোগে। এই রোগে ‘অ্যাডাল্ট হিমোগ্লোবিন’ পরিমাণমতো তৈরি হতে পারে না।
শিশুর প্রথম বছর শেষে মাত্র ১-২ শতাংশ বাদে সব ‘ফিটাল হিমোগ্লোবিন’ স্বাভাবিক ‘অ্যাডাল্ট হিমোগ্লোবিন’-এ পর্যবসিত হয়ে রক্ত তৈরি করে। থ্যালাসেমিয়া রোগাক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনটা হতে পারে না। ফলে দেহের রক্তে ফিটাল হিমোগ্লোবিনের উচ্চমাত্রা বজায় থাকে। আর অ্যাডাল্ট হিমোগ্লোবিন পাওয়া যায় খুব অল্প, কখনো বা শূন্যের কোঠায়।
এ ছাড়া এই থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে ত্রুটিপূর্ণ ‘হিমোগ্লোবিন-ই’ যুক্ত হয়ে আরো মারাত্মক রকমের ‘থ্যালাসেমিয়া-ই’ নামের রোগ আমাদের দেশে শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। এসব হিমোগ্লোবিন বহনকারী লোহিত কণিকাগুলো হয় ত্রুটিপূর্ণ। ফলে সুস্থ মানুষের শরীরে যে লোহিত কণিকাগুলো ১২০ দিন বাঁচে, এদের শরীরে তাদের আয়ু ৩০ দিনের কম থাকে। আবার ওই সব কণিকার বেশির ভাগ অস্থিমজ্জায় তৈরি হয়ে বের হয়ে আসার আগে ধ্বংস হয়ে যায়, ফলে শিশুর দেহে ক্রমেই রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।