দেশের পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি জুনজুড়েই বিরাজমান থাকতে পারে। এছাড়া মধ্যাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে বন্যা। আরও অন্তত ৪৮ ঘণ্টা দেশের ভেতরে এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলে ভারি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকতে পারে। আগের পানির সঙ্গে নতুন করে আসা পানিই পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হতে দেবে না। তবে এরপর বৃষ্টির প্রকোপ কমে যেতে পারে। ওই অবস্থায় বন্যার পানি কমতে শুরু করবে। কিন্তু তা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসতে চলতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। সরকারি সংস্থা বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের (এফএফডব্লিউসি) বিশেষ প্রতিবেদন এবং বন্যা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
এদিকে বন্যা রোববার পর্যন্ত ১৫ জেলায় বিস্তৃত হয়। আজকের মধ্যে আরও দুই জেলা আক্রান্ত হতে পারে। সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, রংপুর, নীলফামারী, শেরপুর, লালমনিরহাট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বগুড়া ও জামালপুর জেলায় বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতি আরও অন্তত ২৪ ঘণ্টা অবনতিশীল থাকতে পারে। শনিবার শরীয়তপুরে পদ্মা বিপৎসীমা পার করে। রোববার এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে টাঙ্গাইল ও মুন্সীগঞ্জ। পানি যত নিচের দিকে নামবে, ততই বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বাড়বে। এই তালিকায় আছে মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, যমুনাপারের পাবনা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও চাঁদপুর।
এছাড়া দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বরিশাল ও সাতক্ষীরায় ইতোমধ্যে সতর্ক সংকেত বা ‘হলুদ’ মার্ক’ দেওয়া হয়েছে। এফএফডব্লিউসি এমন ১২টি স্থান চিহ্নিত করেছে। ওইসব এলাকার নিম্নাঞ্চল বানের পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে আছে পাবনার মাথুরা, শরীয়তপুরের নড়িয়া, সাতক্ষীরায় ইছামতী, বরিশালে কির্তনখোলা। কির্তনখোলায় বিপৎসীমা ২.৫৫ মিটার। রোববার চর কাউয়ায় ২.০৮ মিটার পানি প্রবাহ ছিল। সাতক্ষীরায় ইছামতীতে বিপৎসীমা ৩.৯৫ মিটার। রোববার পানির স্তর ছিল ৩.৪৬ মিটার। হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের বারাহতে শনিবার খোয়াই নদী বিপৎসীমার ওপরে ছিল। তবে রোববার পানি নেমে গেলেও ২০.৯৭ মিটার ছিল। কিন্তু সেখানে বিপৎসীমা ২১.২০ মিটার। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় কুশিয়ারা প্রবাহিত হচ্ছে ১২.৯৫ মিটার সমতলে। এই স্থানে বিপৎসীমা ১৩.০৫ মিটার। এই পরিস্থিতিতে এখানেও সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। এগুলোয় দু-একদিনের মধ্যে বন্যা শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।