সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে রেড ক্যাটাগরির রাসায়নিক হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড থাকার তথ্য গোপন করেছে মালিকপক্ষ। তবে এমন রাসায়নিক রাখার অনুমতি ছিল না তাদের। পরিবেশ অধিদফতর থেকে ডিপোতে শুধু অরেঞ্জ ক্যাটাগরির পণ্য রাখার অনুমোদন ছিল। সেখানে এমন ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক রয়েছে- জানা ছিল না ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের। এর কারণেই সেখানে বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে। এদিকে, অনুমতি ছাড়া রেড ক্যাটাগরির রাসায়নিক রাখায় মালামাল ছাড়পত্র বাতিল করছে পরিবেশ অধিদফতর।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আগুন লাগার পর সেখানে রাসায়নিক রয়েছে- এমন তথ্য পায়নি ফায়ার সার্ভিস। তাই অতি নিকটে গিয়ে আগুন নির্বাপণে কাজ করছিল সংস্থাটির কর্মীরা। আগুনে সেখানে এত বড় বিস্ফোরণ হতে পারে- এমন ধারণাও ছিল না কারও। তাছাড়া রাসায়নিক থাকলেও ডিপোতে ছিল না অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা। এতেই হতাহত বেশি হয়েছে। সর্বোপরি সঠিক তথ্য দিলে হতাহতের সংখ্যা কম হতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয় শনিবার (৪ মে) রাত ১০টায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও আশপাশের লোকজন ছুটে যান সেখানে। তখন অনেকেই যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করেন। নিয়ন্ত্রণের কাজে লেগে পড়েন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আগুনের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ে ইউনিট। একইসঙ্গে ভিড় বাড়ে স্থানীয়দের। তখনও কেউ জানতো না এখানে রয়েছে, বিস্ফোরক হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। মালিকপক্ষও সতর্ক করেনি। পানি পেয়ে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বোমায় রূপ নেয়। একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরণে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়। আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪১ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮২ জন। মৃতের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৯ জন কর্মীও রয়েছেন। রাসায়নিকের সঠিক তথ্য দিলে এত হতাহত না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।