কোভিড মহামারিকে পেছনে ফেলে বিশ্ব যখন মোটামুটিভাবে একটা স্বস্তির শ্বাস নিতে শুরু করেছে ঠিক তখনই নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে মাঙ্কিপক্স। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরই মধ্যে এটা নিয়ে তাদের উৎকণ্ঠা এবং সতর্কতা জারি করেছে। এই উৎকণ্ঠা এবং সতর্কতা জারির পেছনে বড় কারণ হচ্ছে, প্রতিনিয়ত বিশ্বব্যাপী মানুষের অবাধ যাতায়াত। ফলে এটা যদি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তা নতুন করে একটা মানবিক সংকট তৈরি করতে পারে। সংক্রামক রোগের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে, শুরুতেই সতর্ক না হলে তা এক দেশ থেকে আরেক দেশে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। দগদগে কোভিড যাতনা আমাদের সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, মাঙ্কিপক্স কি কোভিডের মতো এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে? বা কোভিডের মতো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে? অবস্থাদৃষ্টে এবং ইতিহাসের নিরিখে অন্তত আমার কাছে তেমন মনে হচ্ছে না। কারণ কোভিড অনেক মানুষের দেহে মৃদু লক্ষণ আকারে দেখা দিয়েছে। এমনকি অনেকের দেহে টেস্টে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে ঠিকই কিন্তু বাহ্যিক কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হয়নি। ফলে এসব মানুষেরা অবাধে কোভিড ভাইরাস ছড়াতে পেরেছে। কিন্তু মাঙ্কিপক্সের ক্ষেত্রে লক্ষণ অপ্রকাশিত থাকে না।
জ্বর, মাথা ব্যথা, গা ব্যথা, দুর্বলতা এগুলো তো থাকবেই। সেই সাথে দেহে গোটা গোটা উঠবে, যা পানি ভর্তি থাকে। পরে পুঁজ হয়। লসিকাগ্রন্থি ফুলে যায়। দু-চার সপ্তাহে সেরেও যায়। ধরে নিন চিকেনপক্স হলে যেমন হয় তেমন। যদিও এটি চিকেনপক্সের সমগোত্রীয় ভাইরাস নয়। বরং বিশ্ব থেকে নির্মূল হয়ে যাওয়া স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের মতো মাঙ্কিপক্সও পক্স ভাইরাস। ফলে এটা পরিষ্কার যে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে এর লক্ষণ প্রকাশিত হবেই। লুকানোর সুযোগ নেই।