পৈতৃক সূত্রে ১০-১২ বিঘা জমি পেয়েছিলেন বৃদ্ধ নবির হোসেন (৯০)। নিজের আয়ে করেছিলেন বসতবাড়ি। ভবিষ্যতে সুখের কথা চিন্তা করে একমাত্র ছেলে সাইদুল ইসলামের নামেই বসতভিটাসহ এসব জমি লিখে দেন তিনি। তবে সে সুখ বেশিদিন রইল না। দুই মাস না যেতেই নবির হোসেন ও তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুনকে বাড়ি থেকে বের করে দেন ছেলে সাইদুল। ফলে গত দুই মাস ধরে বাইরে বাইরে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন বৃদ্ধ এ দম্পতি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রংপুর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন উত্তম বনিক পাড়ায় বসবাস ছিল নবির হোসেনের। দীর্ঘ ৫০ বছর স্থানীয় একটি মসজিদে মোয়াজ্জিন ছিলেন। এখন বয়সের ভারে তেমন একটা হাঁটাচলা করতে পারেন না। তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুনও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ছেলে বের করে দেওয়ায় বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন পার করছেন তারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মাতব্বররা বেশ কয়েকবার সালিশ করেও কোনো লাভ হয়নি।
কিছুদিন না যেতেই ছেলে সাইদুল ইসলাম বাবা নবির হোসেন ও মা সুফিয়া খাতুনের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। রমজানের আগ দিয়ে সুপারি পাড়তে আর ঘরের বেড়ার জন্য দুটি বাঁশ কাটলে বাবাকে মারধর করেন সাইদুল। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গেলে লাঞ্ছনার স্বীকার হন মাও। পরে বাড়ি থেকে বের করে দেন ছেলে সাইদুল।
নবির হোসেন বলেন, ‘অনেক কষ্টে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। অনেক আশা ছিল, শেষ বয়সে বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে সুখে থাকবো। কিন্তু ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিন মেয়েদের না জানিয়ে বসতবাড়িসহ সব জমি-জমা তার নামে রেজিস্ট্রি করে দেই। দু-মাস না যেতেই পুত্রবধূ আমাদের খাওয়া-দাওয়ার কষ্ট দিতে থাকে। বেলা ১১টার পর সকালের নাস্তা, পান্তা ভাত, কোনোদিন দু-একটি রুটি দিলেও তরকারি নেই, দুপুরে ভাত দিলেও রাতে বেশিরভাগ দিন খাবার দিত না। বিষয়গুলো ছেলের কাছে জানালে উল্টো আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিতো।’