শেষ পর্যন্ত তিনি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে অতল সাগরে ভাসিয়ে চলেই গেলেন। এই চলে যাওয়া একদম মেনে নিতে পারছি না। আমার ধারণা, আমার মতো আরো অনেকেরই এই কষ্ট হচ্ছে। বললে ভুল হবে না উদারনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক, দুর্নীতিমুক্ত এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আদলের বাংলাদেশের জন্য পুরো ৫০ বছরই দুই হাতে লিখেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের আগে এবং একাত্তরে তাঁর কলমযুদ্ধের কথা না-ই বা বললাম। কিন্তু বঙ্গবন্ধুসহ স্বাধীন দেশের স্থপতিদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। বিদেশে থেকেও তিনি মানবতাবিরোধী এই অপরাধের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যাদের অভিভাবক হিসেবে স্নেহ ও সাহস জুগিয়েছেন। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে অবিরাম লিখে গেছেন। বলে গেছেন। এমনকি বর্তমান সরকারি দলের সুবিধাবাদীদেরও তিনি ছেড়ে কথা বলেননি। আর যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী তাদের তো তিনি বরাবরই তুলাধোনা করে গেছেন। অসুস্থ শরীরেও তিনি নিরন্তর লিখে গেছেন। বলে গেছেন। গাফ্ফার ভাইয়ের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ আরেকটি কারণে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর তিনি আমার গবেষণাকর্ম ‘নান্দনিক বঙ্গবন্ধু’ বিষয়ে অসুস্থ শরীর নিয়েও বিস্তারিত একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিতব্য এই নামের বইটিতে সেটি লিপিবদ্ধ করেছি। দুর্ভাগ্য, আমরা তাঁকে বইটি দেখাতে পারলাম না।