রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি বড় নগরীতে বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতার ঘটনা নতুন নয়। জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে প্রকল্পও হয়েছে অনেক; খরচও আকাশচুম্বী। তবু এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মেলেনি নগরবাসীর। পুরো বর্ষা আসতে প্রায় এক মাস বাকি, মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। এ বছর অল্প সময়ে অতি ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরও অবধারিতভাবে ডুববে রাজধানী, জলাবদ্ধতায় ভুগতে হবে নগরীর বহু এলাকার বাসিন্দাকে।
২০০১ সালে ১৪৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে 'রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প' নিয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। দফায় দফায় ব্যয় বাড়িয়ে ২০১১ সালে ২০৩ কোটি টাকায় প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়। কিন্তু তার পরের বর্ষা মৌসুমে আবার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ওই প্রকল্পের মূল্যায়ন করে দেখতে পায়, প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ করার কথা ছিল, সে রকম অনেক কাজের কোনো অস্তিত্ব নেই। এরপর দ্বিতীয় ধাপের জন্য আরও ২৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প-২ বাস্তবায়ন করা হয়। ২০১৩ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষে রাজপথ যেন সাগর-নদীতে পরিণত হয়। কেবল এ দুটি প্রকল্পই নয়, গত দেড় দশকে অন্তত ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে ঢাকা ওয়াসা এবং অবিভক্ত ও বিভক্ত দুই সিটি করপোরেশন। করপোরেশন দুটি মহানগরে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দের প্রায় ১০ শতাংশ খরচ করেছে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজে। জলাবদ্ধতা কমেনি।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ মেহেদি হাসান বলেন, ঢাকা শহরটা যেভাবে গড়ে উঠেছে, সেখানে একটি বড় ত্রুটি রয়েছে। সেই অবস্থা বুঝে প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়নি। অবস্থা বুঝে প্রকল্পগুলোর পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা করা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যেমন ৫ কিলোমিটার ড্রেন করা হয়েছে। অন্য দু'পাশে ড্রেন করা হয়নি। ফলে ওইটুকু ড্রেন জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। অর্থটাও জলে গেছে।