উৎসবে মানবিকতার উন্মেষ ঘটুক

সমকাল ড. মোহীত উল আলম প্রকাশিত: ০১ মে ২০২২, ০৯:৪৭

ছাত্রাবস্থায় আমার একটা পরিশ্রমের পড়া ছিল ফরাসি ঔপন্যাসিক রমাঁ রোঁলার কালজয়ী উপন্যাস জাঁ ক্রিস্তফ পাঠ করা। তেমন আর কিছুই মনে নেই। শুধু মনে আছে একটি চরিত্র সম্পর্কে লেখকের একটি মন্তব্য। চরিত্রটি সম্ভবত ক্রিস্তফই; যে কিছুদিন শপথ নিল- খুব মিতব্যয়ী হয়ে চলবে। ফলে তার কঞ্জুসি সিদ্ধান্ত তার বেহিসেবি স্বভাবের ওপর প্রচুর নিম্নচাপের সৃষ্টি করল। তারপর একদিন সে তার সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়ে এমনভাবে খরচ করল, সে হয়তো ওই কঞ্জুসি সিদ্ধান্ত না নিলে এর চেয়ে কম খরচ করত।


গত দুই বছর ২০২০ এবং ২০২১, অতিমারির আক্রমণে লোকজন ঠিকমতো ঈদ উৎসব পালন করতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবে এই বছর তারা ক্রিস্তফের মতোই বেহিসেবি খরচে নামবে এবং নেমেছে যে, তার বিবরণ আমরা প্রতিদিন খবরের কাগজে পড়ছি ও টিভিতে দেখছি। এমনকি আমার শান্তশিষ্ট প্রকৃতির গৃহিণী প্রতিদিন ইফতারের সময় কথাবার্তায় বলছে, ঘরের রং করানো হয়নি অনেক দিন; সোফার তোশকগুলো ফেঁসে গেছে; পর্দার রং জ্বলে গেছে; রান্নাঘরের কেবিনেট পোকায় কাটছে। আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি, এর যে কোনো একটাতে হাত দিলে লাখ টাকার ধাক্কা। আমার স্ত্রী হয়তো মানলেন। কিন্তু বাংলাদেশের সব স্ত্রী তা মানবেন- এমন কথা নেই এবং সব স্বামীও যে আমার মতো দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন, তাও নয়।


ঈদের ধর্মীয় আবেদন ব্যতিরেকে এর মূল তাৎপর্য অর্থনীতির মূল একটি সূত্রের মধ্যে নিহিত। সেটা হলো, কাট ইয়োর কোট অ্যাকর্ডিং টু ইয়োর ক্লথ। এ কথাটা অবশ্য পুরোনো দিনের। এখন বলা হয়, বাই ইয়োর ক্লথ অ্যাকর্ডিং টু ইয়োর নিড- নিজের প্রয়োজন মোতাবেক কাপড় ক্রয় করো। কিন্তু এখানেই লেগে গেল ফ্যাকড়া। প্রয়োজনের সংজ্ঞা তো অনির্ধারিত। অর্থাৎ ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে তফাত; মানে আপেক্ষিক। কারও কাছে একটি বিছানার চাদর জোগাড় করা হচ্ছে প্রয়োজন মেটানো। আবার কারও কাছে একটি এসি লাগানোই হচ্ছে এই গরমের দিনে অত্যাবশ্যক। ঈদ তাই আমাদের একটি চিরকালীন দ্বন্দ্বের মুখোমুখি করে ফেলে- কত আছে, কত খরচ করা যাবে?


প্লাস্টিক অর্থনীতি অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ডের ভূমিকা এই চাওয়া ও পাওয়ার দ্বন্দ্বযুদ্ধে শেকসপিয়রের অন্যতম ভিলেন ইয়াগোর মতো কাজ করে। ইয়াগো একদিকে তার বস ওথেলোকে যেমন বশ করে এই বলে, ধরিত্রীর মধ্যে সে ওথেলোর সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু; অন্যদিকে ওথেলোর কানে ফুসলায়- ওথেলোর বউ ডেসডিমোনা হয়তো ক্যাসিওর সঙ্গে প্রেমে মত্ত। ক্রেডিট কার্ডও সব সময় বিপদের সময় বা স্বাভাবিক সময়ে পাশে এসে দাঁড়ায় ইয়াগোর মতো বিশ্বস্ততা নিয়ে। কিন্তু মাস শেষে যখন ইনস্টলমেন্ট দেওয়ার তারিখটা পড়ে তখন মনে হয়, ক্রেডিট কার্ড ইয়াগোর প্ররোচনা অনুযায়ী নিজের স্ত্রীর ওপর বিশ্বাস হারানোর মতো কাজ করছে। অর্থাৎ যে ক্রেডিট কার্ডকে পাঞ্চ করার সময় চুমো খেতে ইচ্ছা করছিল, সে ক্রেডিট কার্ডই ইনস্টলমেন্ট দেওয়ার সময় ছিঁড়ে কুটি কুটি করার ইচ্ছাবস্তুতে পরিণত হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us