প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের সর্বোচ্চ খুচরামূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৬৮ টাকা। অথচ এই তেল আমদানিতে প্রতি লিটারে খরচ পড়ছে প্রায় ১৭৭ টাকা (প্রতি মেট্রিক টন ১৯৫০ ডলার হিসাবে)।
অর্থাৎ আমদানিতে এখন প্রতি লিটারে সরকার-নির্ধারিত দাম থেকে ১১ টাকা বেশি খরচ পড়ছে। যে কারণে বর্তমানে ভোজ্যতেল আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকেরা। আর তাতেই ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বাজার খাতুনগঞ্জে তেলের ভয়াবহ সংকট তৈরি হতে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের পর বাজারে ভোজ্যতেলের ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে।
খাতুনগঞ্জের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এখন বাজারে যেসব তেল পাওয়া যাচ্ছে এগুলো দু-তিন মাস আগে আমদানি করা। বাজারমূল্য থেকে আমদানি খরচ বেশি হওয়ায় গত দুই মাসে তেল আমদানি একেবারে কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকেরা। যে কারণে আমদানি করা এসব তেল শেষ হলেই বাজারে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে। তার ওপর গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সংকট আরও বেড়েছে। কারণ, বাংলাদেশের পাম তেলের প্রায় ৫৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করত দেশটি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব কারণে ঈদের পর সয়াবিন তেল বাজারে অনেক টাকা দিয়েও পাওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে সিটি কমডিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এখন তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিন তেলের দাম বাড়ছে। কিন্তু দেশের বাজারে তেলের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। ১০০ টাকা দিয়ে পণ্য কিনে কেউ সেটি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে চাইবে না। তাই সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে আমদানি মূল্য বেশি হওয়ায় তেল আমদানি কমছে। এর সঙ্গে ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ঈদের পর বাজারে তেলের ব্যাপক সংকট তৈরি হবে। তখন ভোজ্যতেলের দাম অনেক বেড়ে যাবে বলে তিনি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মার্চে মাত্র ১৪ হাজার টন সয়াবিন আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছিল, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক কম। এপ্রিলে তেলের এলসি আরও কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, সয়াবিনের চাহিদা মাসে এক থেকে দেড় লাখ টন। ওই চাহিদার বিপরীতে কোনো কোনো মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টন সয়াবিন আমদানি হতো। কিন্তু গত দুই মাসে ৫০ হাজার টনও আমদানি হয়নি।