বহুকাল আগে চীনের সম্রাট হুয়াং তাইয়ের আমলে তাঁর স্ত্রী সাই লিং শি একদিন তুতগাছের নিচে বসে চা পান করছিলেন। তখন গাছ থেকে একটি রেশমগুটি পড়ে গরম চায়ের কাপে। কেউ একজন সে গুটি তুলতে গিয়ে দেখে, গুটি থেকে বের হচ্ছে সরু আঁশ, অর্থাৎ রেশম। এভাবে সম্রাজ্ঞীর অজান্তেই আবিষ্কার হয় সিল্ক। তারপর অনেক দিন চীন দেশে সিল্কের পোশাক তৈরি হলেও সে বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।
সিল্কের পোশাক যেকোনো মৌসুমে পরার উপযোগী বলে বহুকাল ধরেই জনপ্রিয়। এবার ঈদ হচ্ছে অস্বস্তির গরমে। তাই স্বস্তি পেতে সিল্কের পোশাক কিনে গলা ছেড়ে গাইতে পারেন, ‘রেশম ফিরিরে…’।
রাজশাহীর সিল্ক
শহরকে কেন্দ্র করে রাজশাহী জেলা গঠন হয় ১৭৭২ সালে। তারও কয়েক শ বছর আগে এই অঞ্চলে রেশমশিল্পের বিকাশ ঘটেছিল বলে জানা যায়। এখনকার ভারতের মুর্শিদাবাদ ও মালদহ পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছিল রেশম চাষ। ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা রেশমের সুতা ও বস্ত্র ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠাতেন। এগুলো তখন ‘বেঙ্গল সিল্ক’ হিসেবে পরিচিত ছিল। পরে রাজশাহী সিল্ক হিসেবে পরিচিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরও রেশমশিল্প বেশ ভালোই চলছিল এই অঞ্চলে। ১৯৫৯-৬০ সালে রাজশাহী ও ১৯৭৬ সালে ঠাকুরগাঁওয়ে রেশম কারখানা স্থাপিত হয়। পরে রাজশাহীতে স্থাপিত হয় বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড এবং বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। কিন্তু লোকসানের কারণে ২০০২ সালে রাষ্ট্রীয় মালিকানার রেশম কারখানা দুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে রাজশাহীতে রেশমশিল্প টিকিয়ে রেখেছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।