মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা এখন একটি দিনও ভাবতে পারি না। কিন্তু ২৫ বছর আগেও এর অস্তিত্ব ছিল না। গত দুই যুগে এ যন্ত্রটি আমাদের জীবনের সঙ্গে যেভাবে মিশে গেছে সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো উদ্ভাবন এত বিকশিত হয়নি।
কেবল যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যমই নয়, মোবাইল এখন আমাদের নিত্যদিনের বিনোদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি-বাকরি এমনকি গবেষণার হাতিয়ারও। নানা প্রয়োজনে আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হওয়ার পাশাপাশি মোবাইল ফোন উৎপাদন-বিক্রি, সেলফোন সার্ভিস, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ কয়েক লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে এ পণ্যটি। দেশে বছরে শুধু হ্যান্ডসেটের বিক্রিই ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী সমিতির (বিএমবিএ) তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ১২-১৩টি কোম্পানি ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে মোবাইল ফোন উৎপাদনে। এসব কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতা ৪ কোটি ইউনিটের বেশি। নতুন বিনিয়োগ নিয়ে উৎপাদনের অপেক্ষায় রয়েছে কেউ কেউ। আর কারখানা ও বিপণন মিলিয়ে কর্মসংস্থান এক লাখের বেশি মানুষের।
বিএমবিএ সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন জিতু বলছেন, 'মোবাইল ফোন উৎপাদন ও বিক্রিতে দেশে যে একটি বাজার তৈরি হয়েছে শুধু তাই নয়, গ্রাম থেকে শহর পুরো ষোলো কোটি মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছে এ যন্ত্রটি। শুধু হ্যান্ডসেট ইন্ডাস্ট্রি নয়, মোবাইল ফোন এখন মানুষের প্রতিটি কাজেই অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।'
মাত্র ২৫ বছরের ব্যবধানে পুরো পৃথিবীর লাইফস্টাইল পাল্টে দেয়া মোবাইল ফোন বাংলাদেশে প্রথম চালু হয় ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে। হাচিসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল) ঢাকা শহরে এএমপিএস মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোন সেবা শুরু করে। এর আগে বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোনের প্রথম বাণিজ্যিক সংস্করণ বাজারে আসে ১৯৮৩ সালে। ফোনটির নাম ছিল মোটোরোলা ডায়না টিএস ৮০০০এক্স।