বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আবারও বলেছেন, বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা– বেগম খালেদা জিয়া। তিনি এই কথা বলেছেন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের সামনে। জোরালো না হলেও হাততালি পড়েছে একাত্তরে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এসে সেনানিবাসে পাকিস্তানি মিলিটারিদের সহযোগিতায় বসবাস করা খালেদা জিয়ার মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার ঘোষণার পর।
একাত্তরে বেগম খালেদা জিয়া ঢাকা সেনানিবাসে মুক্ত অবস্থায় দিনযাপন করেছেন। এমন কথা গত ৫০ বছর ধরেই মানুষ জেনে এসেছে। হঠাৎ করে কয়েক মাস ধরে বেগম খালেদা জিয়াকে কোন কারণে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। একসময় বিএনপি নেতারা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানিরা বন্দি করে রেখেছিল। তিনি নির্যাতন ভোগ করেছেন, এমনটা প্রচার করে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আখ্যায়িত করার কথাও বলা হয়েছিল। সেদিকটি হালে গুরুত্ব পাচ্ছে না বিএনপি নেতাদের কাছে। সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব বললেন নতুন কথা। তার কাছ থেকে জানা গেলো চট্টগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া মেজর জিয়াউর রহমানকে উদ্বুদ্ধ করে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা প্রতিষ্ঠা করা কতটা সম্ভব হবে জানি না। কিন্তু এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য বেগম খালেদা জিয়া মার্চ মাসে চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন। যা তিনি নিজেও কখনও অস্বীকার করেননি। এটাও সত্য মানুষ যখন ঢাকা চট্টগ্রামের মতো শহরগুলো থেকে পালিয়ে গ্রামে ও ভারতে যাচ্ছিল তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছেন। প্রথমে গুলশান ১ নম্বর একটি বাড়িতে অবস্থান করেন এবং মে মাসের ৮ তারিখ তিনি সেনানিবাসে স্বেচ্ছায় চলে যান।
প্রশ্ন আসতে পারে চট্টগ্রাম থেকে মেজর জিয়াউর রহমান যখন ভারতে চলে যান তখন তিনি তার অবস্থান আগরতলায় গেলেন না কেন? খালেদ মোশাররফ, নুরুল ইসলাম শিশুর স্ত্রীরা ঠিকই তাদের স্বামীর কাছে গিয়েছিলেন? তারা পাকিস্তানি সৈন্যদের হাত থেকে বাঁচতে শুধু গ্রামে আশ্রয় গ্রহণই নয়, ভারতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর প্রাদেশিক সদর দফতর ঢাকা সেনানিবাসে আসেন কেন?
পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি হওয়ার জন্যই কি তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এসেছিলেন? তাও এমন সময় যখন সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছিল। যাক এসব প্রশ্ন বাদ দিয়েই দেখা যাক একাত্তরে ঢাকা সেনানিবাসে বেগম জিয়া কোন অবস্থায় কাটিয়েছেন এবং তিনি মুক্ত নাকি বন্দি ছিলেন।