১৯৫১ সালের জুলাই মাস। বৃষ্টিসিক্ত সেই দিনে প্রেসিডেন্সি কলেজে অংকসহ অর্থনীতিতে নিবন্ধিত হলেন অমর্ত্য সেন। প্রথমে তার পরিকল্পনা ছিল পদার্থবিজ্ঞান ও অংক নিয়ে পড়াশোনা করবেন, কিন্তু বন্ধু সুখময় চক্রবর্তীর আংশিক প্রভাবে পরিকল্পনায় পরিবর্তন ঘটল। তিনি এরই মধ্যে প্রেসিডেন্সিতে অর্থনীতি পড়া শুরু করেছিলেন। অমর্ত্য সেনের সঙ্গে সরাসরি পরিচয় ছিল না তার, তবে শান্তিনিকেতনে একজন মেধাবী ছাত্রের অতিথি হিসেবে পরিচয়ের পথ ধরে দুজনের মধ্যে আকর্ষণীয় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাছাড়া অমর্ত্য সেনের কাছে মনে হয়েছিল ভারতের সামাজিক বৈষম্য নিয়ে তার চলমান উদ্বেগের প্রতি সুখময় সংবেদনশীল।
একদিন সুখময় জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি আমার সঙ্গে মিলে অর্থনীতি অধ্যয়ন করছ না কেন?’ অমর্ত্য সেনের মনোযোগ আকর্ষণ করে তিনি আরো বললেন, অর্থনীতি বিষয়টি তাদের উভয়ের রাজনৈতিক আগ্রহের কাছাকাছি; বিশ্লেষণধর্মী এবং গাণিতিক যুক্তির সুযোগ প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের তুলনায় কম দেয় না অর্থশাস্ত্র। তার ওপর অর্থনীতি মানবিক এবং মজার; বিজ্ঞানের ছাত্রদের মতো বিকালে ল্যাবরেটরিতে কাজ থাকবে না, সুতরাং কলেজের উল্টো দিকে কফি হাউজে ভালো সময় কাটবে। এদিকে অমর্ত্য চিন্তা করলেন সুখময়ের সঙ্গে একই ক্লাসে পড়া এবং তার সঙ্গে নিয়মিত খোশগল্পে মেতে ওঠা হবে অর্থনীতি অধ্যয়নে অতিরিক্ত লাভ। এভাবেই ক্রমে পদার্থবিজ্ঞান বাদ দিয়ে অর্থনীতি ও অংক পড়ায় প্রলুব্ধ হয়েছিলেন অমর্ত্য সেন।