রেলওয়ের সার্ভারে ত্রুটির কারণে শুধু কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টার নয়, অন্য ৭৬টি কাউন্টারেও যাত্রী দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছে না কাক্সিক্ষত টিকিট। একই সঙ্গে অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়েও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। স্বাভাবিক সময়ে টিকিট বিক্রিতে এমন চরম অব্যবস্থাপনায় যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, ১৫ বছর ধরে টিকিট বিক্রিকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে (সিএনএস) বাদ দিয়ে আরেকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমকে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়। শনিবার থেকে সহজ ডটকম টিকিট বিক্রি শুরু করে। কিন্তু, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। শনিবার ভোর থেকে ৭৭টি স্টেশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। টিকিট বিক্রি নিয়ে আগের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাধারণ যাত্রীদের কাঁড়ি কাঁড়ি অভিযোগ ছিল। কিন্তু কোনো অভিযোগই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি।
সরেজমিন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেখা যায়, ঈদের মতো শত শত যাত্রী কাউন্টারের সামনে অপেক্ষা করছেন। বহু যাত্রী মধ্যরাত ও ভোরে লাইনে দাঁড়িয়েও কাক্সিক্ষত টিকিট পাননি। আবার অনলাইনে যারা শত চেষ্টা করেও টিকিট কাটতে পারেননি তাদের অধিকাংশ স্থানীয় স্টেশনের কাউন্টারে দাঁড়িয়েছেন। এতে তাদের দুর্ভোগ দ্বিগুণ হয়েছে। রাজশাহীগামী শাহজাহান জানান, প্রায় ৩ ঘণ্টা অনলাইনে চেষ্টা করে টিকিট কাটতে পারেননি। অনলাইনে তিনি ঢুকতেই পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে সকালে কাউন্টারে এসেছেন। কাউন্টারে এসেও তিনি টিকিট পাননি।
eticket.railway.gov.bd
ওয়েবসাইটে টিকিট বিক্রির অব্যবস্থাপনা চলছে। কিন্তু অভিযোগ-প্রতিবাদ কর্ণপাত করেনি সহজ ডটকম ও রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নতুন সিস্টেমের বিষয়ে বুকিং সহকারীদের প্রশিক্ষণ না থাকায় সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ঘুরেফিরে সব একই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলে যা হয়, কোনো জবাবদিহিতা নেই। আমাদেরও কিছুই করার নেই। আমরা শুধু সহকারী বুকিং মাস্টার দ্বারা টিকিট প্রিন্ট করে বিক্রি করি। এখন পুরো প্রক্রিয়াটি সহজ ডটকম করছে। সব কিছুই তাদের হাতে। অনলাইন অথবা কাউন্টারে টিকিট বিক্রির মূল কাজটি সহজের করার কথা। তিনি আরও বলেন, সকালের দিকে কাউন্টার থেকে কিছু টিকিট বিক্রি হলেও ঘণ্টাখানেক পর টিকিটেই সমস্যা দেখা দেয়। টিকিটের গায়ে প্রায় অর্ধেক শব্দই ভুল আসে।