আসিফ সালেহ ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক। ২০০১ সালে ব্র্যাকে যোগদানের পর থেকে অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ, ইনফরমেশন টেকনোলজি, কমিউনিকেশন এবং সোশ্যাল ইনোভেশনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন এবং প্রয়োজনীয় নেতৃত্ব দেন। ব্র্যাকে যোগদানের আগে আসিফ সালেহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির পলিসি স্পেশালিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া গোল্ডম্যান স্যাক্সে তিনি দীর্ঘ ১২ বছর কাজ করেছেন এবং নিউইয়র্ক ও লন্ডনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ মেয়াদে তিনি সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া গ্ল্যাক্সো ওয়েলকাম, আইবিএম ও নরটেলের সঙ্গেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ২০১৩ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইয়ং গ্লোবাল লিডার নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে তিনি এশিয়া ২১-এর ফেলো নির্বাচিত হন। ব্র্যাকের সুবর্ণজয়ন্তী, করোনা-পরবর্তী সামাজিক চ্যালেঞ্জ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর কার্যক্রমসহ নানা বিষয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এমএম মুসা
৫০ বছর পার করল ব্র্যাক। এ সময়ে স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্বপ্ন কতটা পূরণ হয়েছে?
৫০ বছর পর স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্বপ্ন কতটা পূরণ হয়েছে সে প্রসঙ্গে আমি বলব, ব্র্যাক সবসময় চেষ্টা করেছে বৈষম্য কমাতে। বৈষম্যমুক্ত পৃথিবী ব্র্যাকের ভিশন, যা একদিনে, এক বছরে বা ৫০ বছরে অর্জন সম্ভব নয়। এখানে পদ্ধতিগত জটিলতা রয়েছে। তার পরও আমি বলব যে, বাংলাদেশের উন্নয়ন অন্য অনেক দেশের তুলনায় সুষম হয়েছে। এর অন্যতম কারণ ব্র্যাকের মতো সামাজিক সংগঠনগুলো কাজ করেছে বলে। একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্র্যাক তার সেবা নিয়ে যেতে পেরেছে। এ সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ আগের তুলনায় অনেক ভালো করেছে বলে বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক সূচকে অনেক দেশের তুলনায় এগিয়েছে। যেমন গড় আয়ু, শিশুমৃত্যু হার, মাতৃমৃত্যু হার, নারী শিশুদের স্কুলে যাওয়া, শিক্ষায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানে যোগ দেয়া ইত্যাদি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। কিন্তু ৫০ বছরে এসে যে স্বপ্নটা আমাদের এখনো পূরণ হয়নি এবং এখনো অনেক কাজ বাকি তা হচ্ছে নারীর পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা। আজও সমাজের নারীদের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা হয়। এক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠায় আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। কাঠামোগত জটিলতা নিরসনে কাজ করতে হবে অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে ব্র্যাক আগামী দিনগুলোয় কাজ করে যাবে। যে জনগোষ্ঠী ধীরে ধীরে উপরে উঠে আসছে তারা যাতে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগ পায় ব্র্যাক সেজন্য কাজ করবে। পাশাপাশি উন্নয়নযাত্রায় যারা শামিল হতে পারছে না বা পিছিয়ে রয়েছে তাদের সংযুক্ত করার জন্য আরো সমন্বিত প্রক্রিয়ায় ব্র্যাক অগ্রসর হবে। প্রভার্টি পকেটগুলোতে ও নগরদারিদ্র্য দূরীকরণে ব্র্যাক আরো একনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।