ভারতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর প্রদেশের বিধানসভাসহ পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনে চারটিতে বিজেপি জয়লাভ করার ফলে সেদেশের রাজনীতিতে অনেকগুলো সমীকরণ সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথমত, এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনকে তাদের রাজনীতিতে আগামী ২০২৪ এর জাতীয় নির্বাচন বা লোকসভার নির্বাচনের সেমিফাইনাল হিসেবে ধরা হয়েছিলো। বিজেপি ও তার নেতা নরেন্দ্র মোদি খুব সহজেই সে সেমিফাইনাল পার হলেন। এবং আশি শতাংশ মার্ক নিয়ে। এর ভেতর আরও বড় বিষয়, লোকসভা নির্বাচনে সব থেকে বেশি আসন যে উত্তর প্রদেশে (৮০টি আসন) সেখানেও বিজেপি বড় মাপের একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে। ভারতের হিন্দুত্ববাদী এই রাজনৈতিক দলটির জন্যে এ রাজ্যটির ভোটের হিসাব সুখকর নয়। কারণ, সেখানে সংখ্যালঘু বিশ শতাংশ মুসলিম।
বিজেপি মুসলিমকে তাদের বিপরীত শক্তি হিসেবে তুলে ধরে। অন্য দিকে হিন্দুত্ববাদ সব সময়ই নিয়ন্ত্রিত হয় বর্ণ হিন্দুদের দ্বারা। সেই আদিকাল থেকে এটা চলে আসছে। উত্তর প্রদেশে এই বর্ণহিন্দুর সংখ্যা মুসলিমদের প্রায় কাছাকাছি। বাদবাকি যাদব ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণি। যাদবদের বা নিম্ন বর্ণের দল দুটির নেতৃত্বে একটি মায়াবতী অন্যটি শিবলাল যাদবের ছেলে অখিলেশ যাদব। যাদব পরিবারের সঙ্গে ২০ ভাগ মুসলিম ভোটের একটি অংশের রয়েছে একটা ইমোশনাল সম্পর্ক। অর্থাৎ প্রথমবার বাবরি মসজিদ ভাঙার চেষ্টার সময়ে শিবলাল যাদব কঠোরভাবে বাধা দিয়েছিলেন। অন্যদিকে অন্য পিছিয়ে পড়া বর্ণের দলের নেত্রী সাবেক মূখমন্ত্রী মায়াবতীও যাদব সহ অন্যান্য পিছিয়ে পড়াদের নেতৃত্ব দেন। এর ফাঁক গলিয়ে ২৩ ভাগের মতো বর্ণ হিন্দুর ভোট ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া ( ওবিসি) বর্ণগুলোর ভোটের ভাগ নিয়ে উত্তর প্রদেশে এই প্রথম বারের মতো কোনও দল পরপর দুইবার ক্ষমতায় এলো।