করোনা মহামারির আগে ২০১৭ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করা বাংলাদেশি শিশুদের অর্ধেকেরও বেশি একটি সাধারণ পাঠ্য পড়তে ও বুঝতে পারত না। তবে সিমুলেশনের (কৃত্রিমভাবে তৈরি ব্যবস্থা) মাধ্যমে এখন দেখা যাচ্ছে, স্কুলগুলো বন্ধ থাকার কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পরও ৭৬ শতাংশ শিশু ন্যূনতম পড়ার দক্ষতা অর্জন করতে পারবে না। করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দরিদ্র ও মেয়ে শিশুরা। তারা ঝরে পড়ার উচ্চ ঝুঁকিতে ছিল।
‘কভিড-১৯-এর সময় পড়াশোনাকে অগ্রাধিকার প্রদান’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস, ইউনিসেফ ও বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় গ্লোবাল এডুকেশন এভিডেন্স অ্যাডভাইজারি প্যানেল (জিইইএপি) এ প্রতিবেদন তৈরি করে। গতকাল রবিবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে জিইইএপি, এফসিডিও, বিশ্বব্যাংক, ইউনিসেফ, উন্নয়ন অংশীদার ও সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী বিশেষজ্ঞ প্যানেলিস্টদের উপস্থিতিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারি চলাকালে তৃতীয় গ্রেডের যে শিশুটির স্কুলে যাওয়া এক বছর ব্যাহত হয়েছে, জরুরি পদক্ষেপ না নিলে দীর্ঘ মেয়াদে ওই শিশুটি পড়াশোনার ক্ষেত্রে তিন বছরের সমপরিমাণ ক্ষতির শিকার হতে পারে।
মহামারি চলাকালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে স্কুল বন্ধ থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশে তিন কোটি ৭০ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশের স্কুলগুলো ১৮ মাস ধরে বন্ধ ছিল। স্কুলগুলো ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছিল, তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার এক মাসের জন্য বন্ধ রাখা হয়।
প্যানেল আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘মহামারিকালে বিশ্বের অন্য যেকোনো জায়গার মতো বাংলাদেশেও নজিরবিহীন মাত্রায় লাখ লাখ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। এই শিশুদের ভবিষ্যৎ ও বর্তমানে তাদের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে পড়াশোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য বিনিয়োগ করা এবং সব শিশু যাতে স্কুলে ফিরে আসে ও পড়াশোনা চালিয়ে যায়, তা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা মিশ্র শিক্ষার দিকে অগ্রসর হচ্ছি এবং সরকার তার অংশীদারদের সহযোগিতায় সেই লক্ষ্য পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’