পরিকল্পনা ছিল স্বচ্ছ জলাধার হবে হাতিরঝিল। জলাশয়ে চাষ হবে নানা প্রজাতির মাছ। নগরবাসীর জন্য থাকবে সাঁতার কাটার ব্যবস্থা। চলাচল করবে পাল তোলা নৌকা। সঙ্গে তৈরি হবে যাতায়াতের সহজ ও নিরাপদ একাধিক মাধ্যম, যা ভূমিকা রাখবে রাজধানীর যানজট নিরসনে। আর পুরো জলাধারটি পরিণত হবে ঢাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যমে। এমন পরিকল্পনা নিয়ে প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ করে বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিলের সমন্বিত উন্নয়ন করেছে সরকারের তিন সংস্থা। বাস্তবায়নের পর আধুনিক যোগাযোগ অবকাঠামো, পার্ক, থিয়েটারের মতো সুবিধা তৈরি হলেও স্বচ্ছ পানির জলাধার হয়ে ওঠেনি হাতিরঝিল। উল্টো দূষিত-দুর্গন্ধ পানিতে ম্লান হচ্ছে হাতিরঝিলের নান্দনিক সৌন্দর্য। এজন্য সঠিক পরিকল্পনার অভাব, যথাযথভাবে নকশা না করা, সর্বোপরি সঠিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায়ও হাতিরঝিলকে স্বচ্ছ পানির জলাধার করতে না পারার পেছনে পরিকল্পনার ব্যর্থতাকেই দায়ী করা হয়েছে। মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) এমনই এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০০৭ সালে উন্নয়নকাজ শুরুর আগে হাতিরঝিল এলাকাটি ছিল গৃহস্থালি ও শিল্পবর্জ্যের ডাম্পিং জোন। ২০১৩ সালে চালু হওয়ার মাস দশেক পর থেকেই রঙ হারাতে শুরু করে হাতিরঝিলের পানি। ক্রমেই তা পরিণত হয় দূষিত-দুর্গন্ধ পানির আধারে। গবেষণায় পাওয়া ফলাফল ‘অ্যাপ্লিকেশন অব কনস্ট্রাক্টেড ফ্লোটিং ওয়েটল্যান্ড ইন থ্রেটিং আরবান ওয়েস্ট ওয়াটার: আ কেস স্টাডি অন হাতিরঝিল লেক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে।