রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার একজন আমলা। বাকি চারজন কমিশনারের একজন বিচার বিভাগের অপর তিনজনের দুই জন বেসামরিক আমলা একজন সামরিক আমলা। সার্চ কমিটি যে নামের তালিকা প্রকাশ করেছিলো তা দেখে সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন, নির্বাচন কমিশন এমনই হবে। সেখানে বেসামরিক ও সামরিক আমলাদের প্রাধান্য থাকবে। সত্য হলো এই দুই শ্রেণি ছাড়া বাকি সকল পেশার মানুষ ক্রমেই সমাজ থেকে অপসৃয়মান হয়ে যাচ্ছে। কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে অপর পেশার মানুষরা। এমনকি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করে যে রাজনীতিকরা তারাও যেন দিন দিন এই দুই শ্রেণির কাছে গুরুত্বহীন হয়ে যাচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে, আর রাষ্ট্র সমাজের জন্যে এটা কতখানি ভালো তা এ মুহূর্তে বিবেচনা করার সময় কারো হাতে নেই। তার ওপরে কোভিড-১৯ পরবর্তী জীবন শুরুর একটা তাগিদ তো আছে। তবে এ বিষয়টি পাকিস্তান আমলেও ঘটেছিলো।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একদিন আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, তাঁর জীবনের ইচ্ছে ছিল শিক্ষাকতা করার কিন্তু ভাষা আন্দোলনের পরে জেলে গিয়ে তিনি বুঝতে পারলেন, জীবনে যদি ক্ষমতা ভোগ করতে হয় তাহলে সরকারি আমলা হতে হবে। আর সেখান থেকেই তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন। তিনি সিএসপি পরীক্ষা দিয়ে জীবনের পরিবর্তন ঘটান। আবুল মাল আবদুল মুহিত পাকিস্তান আমলে যেটা বুঝেছিলেন পঞ্চাশের দশকে সেটা আবার এখনকার ছাত্ররা অনেক বেশি বুঝছে। কারণ, কোটা আন্দোলনের নামে বাংলাদেশে ছাত্রদের যে বড় আকারের আন্দোলন হয় ও সরকারকে তার দাবি মেনে নিতে হয়, তা ছিল মূলত সরকারি চাকরিতে যাওয়ার জন্যে আন্দোলন। যে আন্দোলনের ভয়াবহতা ও হিংস্রতা দেখে, শিক্ষক ড. জাফর ইকবাল বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, শুধুমাত্র সরকারি চাকরির জন্যে এভাবে রাস্তাঘাট বন্ধ করে ছাত্ররা আন্দোলন করতে পারে সেটা তিনি ভাবতে পারেন না।