সম্প্রতি পেন্টাগনের মুখপাত্র রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ‘রাশিয়া যদি ইউক্রেন হামলা করে, তবে তাদের এই “খায়েশি যুদ্ধের” পরিণতি হবে রক্তাক্ত। সেই যুদ্ধে রাশিয়া কোনো দিনও জিতবে না। আমি নিশ্চিত যে এর উত্তরে পুতিন বলেছেন, “হ্যাঁ, তোমরা ইরাকে যেটা করেছ!”’
স্মরণ করে দেখুন ইরাক যুদ্ধের সময়টা। সাদ্দাম হোসেনের ইরাকের বিরুদ্ধে জর্জ ডব্লিউ বুশের সেই ‘খায়েশি যুদ্ধে’ পুতিন সর্বান্তঃকরণে বিরোধিতা করেছিলেন। বুশ সে সময় প্রতিপক্ষের এ কথা পাত্তা দেননি কিংবা কানে তোলেননি। স্বাভাবিকভাবেই ওয়াশিংটনের রণদামামার শব্দ ছিল অনেক উচ্চকিত। বুশকে ঘিরে সে সময় নব্য সংরক্ষণবাদীরা ভিড় করে ছিলেন। তাঁরা বুশকে বুঝিয়েছিলেন শীতল যুদ্ধের পর পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ঝিমিয়ে পড়েছে। ইরাকে হামলা চালানো হলে সেটা আবার চাঙা হবে।
ক্ষমতার কেন্দ্র বদল
২০০২-২০০৩ সালে আমেরিকা সামরিক শক্তির দিক থেকে চূড়ায় পৌঁছেছিল। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর আমেরিকার জনগণের মনে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে তারা যেকোনো শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়া উচিত বলে মনে করেছিল। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী মনে করছে কিংবা আন্তর্জাতিক রীতি কী আছে, তার কোনো তোয়াক্কা করেনি বুশ প্রশাসন। সাদ্দাম হোসেন সে সময় ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিনায়কের মতো যুদ্ধে প্ররোচনা জুগিয়েছিলেন।
সে সময়ের রাশিয়ার ক্ষমতা ও প্রভাব আজকের দিনের ধারেকাছেও ছিল না। মস্কো আমেরিকার আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছিল, কিন্তু তাতে ইরাকে আগ্রাসন থামানো যায়নি। ২০ বছর পর একই রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ২০ বছরের ব্যর্থ যুদ্ধে আমেরিকা এখন পর্যুদস্ত ও অপমানিত, তাদের অর্থনীতিতে চলছে অস্থিরতা। আর রাশিয়া এখন শীতল যুদ্ধের পর সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে।