২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরুতে দেশের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১ হাজার ৯০৯ ডলার। ২০২০ সালের ১১ আগস্ট বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মধ্যেও অর্থবছরের শেষে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ ছিল, এতে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এরপর ২০২০-২১ অর্থবছরের শেষে জুলাইতে বিবিএস মাথাপিছু আয়ের হিসাব দেখিয়েছে ২ হাজার ২২৭ ডলার। ২০২১ সালের নভেম্বরে এসে বিবিএস আবারও নতুন সুখবর নিয়ে হাজির হয়েছে! মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে।
বিবিএসের সর্বশেষ হিসাবে, দেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। নতুন হিসাবে মাথাপিছু আয় বেড়েছে আরও ৩২৭ ডলার, এর কারণ অর্থনীতির কোনো সূচকের উন্নতি নয়, নতুন কোনো জরিপ নয়, বরং ভিত্তি বছর পরিবর্তন। দেশের মাথাপিছু বাৎসরিক আয় টাকায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, মাসে জনপ্রতি ১৮ হাজারের বেশি। অর্থনীতিবিদদের মতে, বিবিএস জাতীয় আয়, শ্রম আয়, খানা আয় ইত্যাদির পরিসংখ্যানে মূল্যস্ফীতিকে সঠিকভাবে বিয়োগ করে না, এমনকি মূল্যস্ফীতি হিসাবটিও পদ্ধতিগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ। জনসংখ্যার হিসাবেও ত্রুটির অভিযোগ আছে। দেশের জনসংখ্যা কমিয়ে দেখানো হয় বলেও দেশজ প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু জাতীয় আয় বাড়িয়ে দেখানো যায়।
মাথাপিছু গড় আয় ব্যক্তির আয় নয়, দেশের বার্ষিক মোট আয়কে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথাপিছু আয়ের হিসাব করা হয়। মৌলিক প্রশ্ন হচ্ছে, যেখানে উন্নয়ন সহযোগীসহ সবাই বলছেন দেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটির বেশি, সেখানে বিবিএস কীভাবে সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যা হিসাব করে? এই জনসংখ্যা এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কতটুকু সঠিক? বিবিএস কি জনসংখ্যা কম দেখাচ্ছে, যাতে গড় মাথাপিছু আয় স্ফীত দেখায়?