রায়হানা রহমান অফিসে আসা-যাওয়ার পথে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নিচের ফুটপাত ধরে হাঁটতে প্রায় প্রতিদিনই বেশ কয়েকটি শিশুর জটলা দেখি। এদের সবার বয়স ৭-১৪ বছরের মধ্যে। একসাথে গোল হয়ে বসে থাকে। প্রত্যেকের মুখে পলিথিন। সেই পলিথিন মুখে লাগিয়ে ওরা জোরে জোরে শ্বাস টেনে নিচ্ছে। আসলে ওরা ড্যান্ডি নামক একধরনের মাদক গ্রহণ করে। আমি সামনে এগিয়ে ওদের সামনে দাঁড়াতেই জটলা ভেঙে যায়। প্রশ্ন করি, কী করছো তোমরা? আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সবাই চলে যায়, সাত-আট বছরের একজন থেকে যায়। বলে ড্যান্ডি খাই। জিজ্ঞেস করি, এটা কী? বললো এটা খাইলে খিদা লাগে না। প্রশ্ন করি- মা-বাবা কই? উত্তর আসে- বাবা কই জানে না। মা সিগন্যালে ভিক্ষা করে।
রাজধানী ঢাকায় চলতে গেলে এটাই এখন প্রায় নিয়মিত দৃশ্য- কয়েকজন শিশুর মাদক গ্রহণ। ওরা যে মাদক গ্রহণ করে সেটার নাম ড্যান্ডি। এটা মূলত একধরনের আঠা। এই আঠা সাধারণত জুতা মেরামতের কাজে ব্যবহৃত হয়। অত্যন্ত সহজলভ্য হওয়ায় এবং মোটামুটি সব এলাকায় এর প্রাপ্যতা সহজ হওয়ায় এইসব পথশিশুরা খুব প্রকটভাবে এই আঠা বা ড্যান্ডি নেশার আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।পলিথিন ব্যাগে এই আঠা নিয়ে কিছুক্ষণ ঝাকিয়ে নাকমুখ দিয়ে বাতাস টেনে নিলেই নেশাগ্রস্ত হওয়া যায়। এই নেশার মূল কারণ হয়তো ক্ষুধা কমানো। এই নেশা গ্রহণ করলে বেশ অনেকটা সময় ক্ষুধার অনুভূতি থাকে না। আর তাই এই ছোট ছোট শিশুরা এই নেশার ফাঁদে পড়ে তলিয়ে যাচ্ছে।