‘আমাকে যেভাবে সংগ্রাম করতে হয়েছিল, আশা করি অন্যদের ততোটা সংগ্রাম করতে হবে না। আমি নারীদের চাকরি খুঁজে পেতে এবং তাদের অগ্রগতিতে সহায়তা করতে চাই’—বলছিলেন একেবারে নিম্নস্তরের পোশাক কর্মী থেকে মাঝারি স্তরের কর্মকর্তা হয়ে ওঠা জান্নাতুল ফেরদৌস মিন। নিজের মতোই সব বাংলাদেশি নারীর ব্যাপারে তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। আজ তিনি যে পর্যায়ে পৌঁছেছেন, তা কেবল পড়াশোনার জোরে। নইলে একই সঙ্গে কাজে যোগ দেওয়া অন্যদের মতো এখন পর্যন্ত তাকে সেলাই কিংবা কাপড় কাটা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হতো। মিনের মতো অসংখ্য পোশাককর্মীও আজ বুঝতে পারছে, কাজের ক্ষেত্রেও লেখাপড়া জানাটা যে আজ কতোটা জরুরি। আর এ ব্যাপারে সুখবর হচ্ছে, শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রবেশাধিকারের নাটকীয় উন্নতি ঘটছে, বিশেষত মেয়ে ও নারীদের বেলায়। গত কয়েক দশক জুড়েই এ বিষয়টি শুধু লক্ষ্যণীয়ই নয়, বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতও। তবে এখন পর্যন্ত বাস্তবতা হচ্ছে, বহু নারী প্রাথমিক-পরবর্তী শিক্ষা সমাপ্ত করতে ব্যর্থ হয় এবং যদিওবা হাই স্কুলের গন্ডি পেরোয়, তাহলেও তারা ভালো চাকরির বাজারে সরাসরি প্রবেশ করতে পারছে না করিগরি জ্ঞানের অভাবে। প্রাথমিক স্কুলে পড়ার সময়েও খানা ও আয় অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকায় গরহাজিরের হারটাই থাকে বেশি, যার পরিণতি হচ্ছে শিক্ষার দুর্বলতর ফলাফল। এ দুটি বিষয়ই আবার স্কুল থেকে ঝরে পড়ার মূল কারণসমূহ। অধিকন্তু বাল্যবিবাহের দরুন হাই স্কুলে মেয়েদের উপস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব হেতুর সম্মিলন ঘটাতেই দেখা যায় যে, খুব কমসংখ্যক মেয়েই মাধ্যমিকের পড়া শেষ করতে পারে।