সব দেশেরই নিজস্ব কিছু অভিনব পণ্য থাকে, যা অন্যদের নেই। সেটি হতে পারে কোনো ভৌগোলিক এলাকার কোনো সম্প্রদায়ের বিশেষ দক্ষতার স্বাক্ষর বহনকারী সূক্ষ্ণ বুননের মাধ্যমে আপন মমতায় নির্মাণ করা কোনো পণ্য। হতে পারে নানা রকম উপকরণের যথাযথ মিশ্রণ আর দেশজ প্রক্রিয়াকরণ কৌশল প্রয়োগ করে তৈরি করা কোনো বিশেষ রকম খাদ্যদ্রব্য। কিংবা হতে পারে প্রাকৃতিকভাবে প্রকৃতির নিয়মে সৃষ্ট কৃষিপণ্য বা মানুষের মমতায় লালিত কৃষিজাত পণ্য। নরসিংদীর অমৃতসাগর, দিনাজপুরের কাটারিভোগ, পদ্মার ইলিশ, পাবনার ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, জামালপুরের নকশিকাঁথা, ঢাকাই জামদানি, শ্রীমঙ্গলের খাসিয়া পান, যশোরের খেজুরের গুড়, কালিয়াকৈরের চিড়া, কুষ্টিয়ার তিলেখাজা- এমনি করে দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট কত ভৌগোলিক পণ্য! বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে মেধাস্বত্বের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করার যে প্রয়াস সংস্থাটি ট্রিপস চুক্তির মাধ্যমে নিয়েছে, এরই ফলে সব দেশ তার নিজস্ব ভৌগোলিক এলাকার এমন সব মূল্যবান লোকজ ও প্রাকৃতিক সম্পদেরও মেধাস্বত্ব প্রদানের সুযোগ পেয়েছে। বলাবাহুল্য, আমাদের এ রকম পরম কাঙ্ক্ষিত ভৌগোলিক যেসব পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়, এদের অনেকেরই জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এদের কোনো কোনোটি ইতোমধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে মেধাস্বত্ব লাভও করেছে।