সংসদের বাজেট অধিবেশন চলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সংসদের বাইরেও আলোচনার কমতি নেই। জনা কয়েক বিরোধী সদস্য, আপসী বিরোধী দল এবং সামগ্রিকভাবে সাংসদদের ক্রমহ্রাসমান মানের কারণে সংসদীয় আলোচনা গুরুত্ব হারিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বাইরে অর্থনীতিবিদ ও অন্যান্য অংশীজনের আলোচনায় সরকারের নজর রাখা প্রয়োজন।
দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে বা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু একই সঙ্গে নাগরিক জীবনে যে দুর্নীতি-সংস্কৃতির সর্বগ্রাসী বিস্তার ঘটে চলেছে, তা–ও তো সত্য। এর পরিণতিতে প্রথম আঘাত লাগে সমাজ এবং ব্যক্তির নৈতিক চেতনা ও শক্তির ওপর। দুটিই দুর্বল হয়, শেষে ধসে যায়, সমাজে নৈতিক প্রতিরোধ বলে কিছুই থাকে না। এই অবস্থায় অপরাধ ও বেআইনি কাজে অন্তরের বাধা নিষ্ক্রিয় থাকে বলে সমাজ ও ব্যক্তি অনৈতিকতার সঙ্গে আপস করে চলায় অভ্যস্ত হয়ে যায়। এবং ক্ষমতাবান বেপরোয়া হলে দুর্নীতি মানার বাধ্যতা তৈরি হয়। এই বাস্তবতা আদতে নিছক রোগ নয় যে ব্যক্তি হিসেবে সংক্রমিত হওয়ার অপেক্ষা থাকবে, এ হলো প্লাবনের মতো, মানবিক বাঁধগুলো অকেজো হয়ে পড়লে অমানবিকতার রোগ মহাপ্লাবনেরই রূপ নেয়, অজান্তে নীরবে গোটা সমাজকে ডুবিয়ে দেয়। তবে আকস্মিকভাবে এমন প্লাবন আসে না, লক্ষণগুলো সমাজে–রাষ্ট্রে ফুটে উঠতে থাকে। সময়মতো বাঁধ না দিলে, প্রতিকার না করলে মহাপ্লাবন তো ঠেকানো যাবে না।