আগের এক লেখায় আমরা বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী বীমা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সমস্যা ও তার প্রতিকার নিয়ে আলোচনার প্রয়াস পেয়েছি। সে ধারাবাহিকতায় আমরা ইসলামী বীমা কোম্পানিগুলোর চুক্তি ফরম, প্রসপেক্টাস ইত্যাদি কাগজপত্রের ত্রুটিগুলো নিয়ে কিছু আলোচনা করব। মূলত এগুলো এমন মৌলিক সমস্যা, যা থেকে মুক্ত হওয়া ছাড়া ইসলামী বীমা ব্যবস্থার প্রকৃত সুফল মিলবে না। তাই এসব সমস্যা নিয়ে আলোচনার দাবি রাখে। এবার মূল আলোচনায় আসা যাক—
ইসলামী বীমাসংক্রান্ত কাগজপত্রের ত্রুটি-বিচ্যুতি
ইসলামী বীমাবিষয়ক ফর্ম, পরিচিতি, শর্তাবলি ইত্যাদি কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। এসব ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকাটাও এ দেশে ইসলামী বীমা অনগ্রসরতার একটি মৌলিক কারণ। শ্রদ্ধাভাজন আলেম শ্রেণী ইসলামী বীমাকে ভিন্ন চোখে দেখার এটিও একটি কারণ। নিম্নে নমুনাস্বরূপ কিছু ত্রুটি মন্তব্যসহ উল্লেখ করা হলো:
১. একটি প্রসিদ্ধ ইসলামী বীমা কোম্পানির ফরমে লেখা আছে—‘আমি আরও ঘোষণা করিতেছি যে...ইনসিওরেন্স কোম্পানির আবেদনপত্রে বা ঘোষিত বিবৃতিতে কোন প্রকার অসত্য বর্ণনা থাকিলে প্রস্তাবিত বীমা চুক্তি বাতিল বলিয়া গণ্য হবে এবং প্রদত্ত প্রিমিয়াম কোম্পানি কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হইলে আমার কোন আপত্তি থাকবে না।’
মন্তব্য: ইসলামী জীবন বীমায় প্রায় ৯০ শতাংশ প্রিমিয়াম মুদারাবা ফান্ডে দেয়া হয়। আর মুদারাবা চুক্তিতে এরূপ কোনো শর্ত করা এবং মূল পুঁজি বাজেয়াপ্ত করা মুদারাবা-সংক্রান্ত মূলনীতির স্পষ্ট পরিপন্থী। আর অসত্য বর্ণনা বলতে যা বোঝানো হয় তা হলো, বীমাবহির্ভূত কোনো রোগ শরীরে ছিল, সেটা হয়তো গোপন করা হয়েছে কিংবা বয়স লুকানো হয়েছে ইত্যাদি। এসব কারণে রব্বুল মালের সম্মতিতেও মূল পুঁজি বাতিল করার কোনো অবকাশ নেই।
এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এতটুকু করা যায়, বীমা চুক্তিটি বাতিল করে দেয়া। আর বাতিল করা পর্যন্ত বাস্তব যা খরচ হয়েছে তা কেটে রাখা। তবে অপরচুনিটি কোনো কস্ট কেটে রাখা যাবে না।