করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে শয্যা খালি না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটতে ছুটতে রোগীরা যখন মৃত্যুঝুঁকিতে পড়ছেন, তখন এই রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে শয্যা পরিস্থিতির প্রতিদিনের হালনাগাদ তথ্য জানছে না সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরকারি-বেসরকারি ‘কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের’ শয্যা সংখ্যার যে পরিসংখ্যান প্রতিদিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়, তা সাধারণত ‘দুয়েকদিন আগের তথ্য’।
এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয় ফোনে, যেখানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হাসপাতালগুলোর শয্যা পরিস্থিতির প্রতি মুহূর্তের হালনাগাদ জানা ও তা জনগণের সামনে প্রদর্শন করা সম্ভব। প্রতিদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালগুলোর মোট শয্যা, ভর্তি রোগীর সংখ্যা এবং কতটি শয্যা খালি আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সে হিসাব দেওয়া হয়।
শুক্রবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকার সরকারি-বেসরকারি ১৯টি হাসপাতালের ৩৬২২টি সাধারণ শয্যার মধ্যে ৪৩০টি খালি থাকার এবং ৩০৫টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ১৭টি খালি থাকার তথ্য তুলে ধরা হয়।
৯০ হাজার রোগীর চিকিৎসা চলছে হাসপাতালের বাইরে
করোনায় আক্রান্ত ৯০ হাজারের বেশি রোগী বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁরা প্রধানত টেলিমেডিসিনের ওপর নির্ভরশীল। তবে এসব রোগী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে কতটা কার্যকর সেবা পাচ্ছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব অধিদপ্তরের কাছে নেই। করোনায় আক্রান্ত সব রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন না, নেওয়ার দরকারও নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মহামারির শুরুর দিকে বলেছিল, আক্রান্ত রোগীর ২০ শতাংশের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার হতে পারে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সবার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার দরকার নেই। যাঁদের রক্তে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমে যায়, সংক্রমণে যাঁদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাঁদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার দরকার হয়।’
করোনা রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যু সংখ্যা সাড়ে ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের ফলে এখন ঢাকার বাইরেও প্রচুর রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
প্রতিদিনই হাজারো মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় মারাত্মক চাপে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে দেশে ৬৫৪টি সরকারি এবং ৫ হাজার ৫৫টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর সময় রোগীর চাপ ও আতঙ্কে সাধারণ রোগীরাও অতি জরুরি না হলে হাসপাতালে যাচ্ছেন না।