দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর দুই মাসের মাথায় সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে টিকা পাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা পাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে সরকার।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই দুটি দেশের টিকা দ্রুত নিতে চায় বলে দুই দেশের দূতাবাসকে জানিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো দেশই টিকা দিতে চাইলে সরকার নেবে বলে মনস্থির করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, টিকা নিরাপদ, এটা নিশ্চিত হয়েই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
গতকাল দেশব্যাপী শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজের টিকা কার্যক্রম। গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে বুধবার পর্যন্ত ৫৫ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ জন প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের সবারই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া উচিত। জানা যায়, বর্তমানে সরকারের হাতে মজুত আছে ৪৬ লাখ ৩১ হাজার ২৯৭ ডোজ টিকা। সেক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৬ ডোজ। এদিকে ভারত সরকার রপ্তানি স্থগিত করায় টিকা পাওয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
টিকার বিকল্প উৎসের খোঁজে বাংলাদেশ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। ভারত সরকার রপ্তানি স্থগিত করায় টিকা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে টিকার চালান পাওয়া গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় ধাপেই ৩০ লাখ ডোজ কম আসে। আর তৃতীয় ধাপে কোনো টিকাই পাওয়া যায়নি।
ফলে চুক্তি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৮০ লাখ ডোজ টিকা কম পেয়েছে বাংলাদেশ। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার ফলে এপ্রিল মাসের টিকা পাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন: টিকাদান কর্মসূচী কি গভীর সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে?
বাংলাদেশে আগামী ৮ই এপ্রিল থেকে করোনা ভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরুর কথা থাকলেও নতুন করে টিকা পাওয়া নিয়ে সংকটের মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। এমনকি প্রথম ডোজ পাওয়া সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টিকাও এ মূহুর্তে স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে নেই।
পাশাপাশি ভারতে তৈরি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রপ্তানির ক্ষেত্রে দেশটি সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারির পর এ নিয়ে আশঙ্কা আরও তীব্রতর হয়েছে।
জানুয়ারি থেকে গত তিন মাসে বাংলাদেশের কেনা টিকার মধ্যে দেড় কোটি ডোজ আসার কথা থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবেই এখন পর্যন্ত সে টিকা থেকে বাংলাদেশে পেয়েছে অর্ধেকেরও কম।
করোনা টিকার কোনো সংকট হবে না: প্রধানমন্ত্রী
করোনা টিকার কোনো সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদের সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের টিকার কোনো সংকট হবে না। দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম চলতে চলতে বাকি টিকা চলে আসবে। এ সময় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও মাস্ক পরার আহ্বান জানান তিনি।