শীতে ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোর বাতাসে ১০ গুণ বেশি দূষণ
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২১, ২০:১৭
নতুন এক গবেষণায় ঢাকার প্রধান দুটি সরকারি হাসপাতালে শীতকালে সহনশীল মাত্রার চেয়ে ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকারক বায়ু দূষণকারী উপকরণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
আর বর্ষার প্রাক্কালে হাসপাতালগুলোর অভ্যন্তরীণ বাতাসের গুণগত মান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাম্বিয়েন্ট এয়ার কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ড (এনএএকিউএস) স্বীকৃত সহনশীল মাত্রার থেকে দুই গুণেরও বেশি খারাপ ছিল।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা কমপ্লেক্সের বাতাসের মানের ওপর ভিত্তি করে গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গত ১৫ মার্চ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ও পলিউশন রিসার্চ (পরিবেশ বিজ্ঞান ও দূষণ গবেষণা) জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারির মধ্যবর্তী সময়ে ওই তিন হাসপাতালের ১৬টি জায়গায় বাতাসের গুণগত মান পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল।
ঢাকা শহরের বাতাসে দূষিত বস্তুকণার পরিমাণ বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে। সরকারি ছুটির দিন শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকাল ৯টায় রাজধানীতে বায়ুদূষণ গিয়ে ঠেকেছে ৪৬৯ পিএম-২.৫। ফলে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। দ্য ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স প্রজেক্ট (একিউআইসিএন) এ তথ্য দিয়েছে।
একিউআইসিএনের রিপোর্ট বলছে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বায়ুদূষণের মাত্রা ৩০০ পিএম-২.৫ ছাড়িয়ে গেলে সেই দূষণকে বিপজ্জনক বলা হয়ে থাকে। বাতাসে এই মাত্রার দূষণে যে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেওয়া লকডাউনের প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ুতে গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার ফলে আবারও লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল হয়েছে, সচল হচ্ছে অর্থনীতির চাকাও। ফলে এই মানের পরিবর্তন বেশিদিন ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিএনএন। বিশ্বব্যাপী বাতাসের মান হিসেব করা পরিসংখ্যান ওয়েবসাইট আইকিউ এয়ারের ২০২০ সালের ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটির প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, লকডাউনের সময় বিভিন্ন শিল্প কারখানা এবং যানবাহন থেকে কার্বন নির্গমন হ্রাস পেয়েছে।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ জলবায়ু সহনীয়তা নিশ্চিতের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়, সিভিএফের অন্যান্য সদস্য দেশ এ প্রত্যাশার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর, ২০২০ প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় ‘মিডনাইট সারভাইভাল ডেডলাইন ফর দ্য ক্লাইমেট’ উদ্যোগ গ্রহণসহ প্যারিস চুক্তির কার্যকর বাস্তবায়ন, এনডিসির লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি হস্তান্তর, জলবায়ু তহবিলের জোগান বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির বিষয় আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করে বর্ধিত এনডিসি ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়।