চরম সংকটে মানুষ ভেঙে পড়ে ছোট ও তুচ্ছ হয়ে যায়। আবার অনেকে দাঁড়িয়ে পড়ে সেরাটা দিতে চেষ্টা করে। মানুষ সবচেয়ে বড় যা দিতে পারে, তা হলো প্রাণ। তাকে সবচেয়ে ছোট করে ভয়। মিয়ানমারবাসী ভয় কাটিয়ে প্রাণ দিতে রাজি অবস্থায় রাস্তায় নামছে প্রতিদিন। সেনা অভ্যুত্থানের প্রায় এক মাস হতে চলল, বন্দুকের শাসন এখনো বাধাহীন করতে পারেনি জেনারেলেরা। এর জন্য প্রতিদিন প্রাণ নিতে হচ্ছে তাদের। গত বুধবার নিহত হয়েছে ৩৮ জন বিক্ষোভকারী। তার আগে ৯, তার আগে ১৮ জন, তার আগে ২৭ জন। এভাবেই মিয়ানমারে দিন আসছে বিদ্রোহ আর রক্তের ধারায়।
ইতিহাস বড়ই নিষ্ঠুর ও পরিহাসপ্রিয়। দুই বছর আগে যখন সেনাবাহিনীর বন্দুক রোহিঙ্গাদের প্রাণ নিচ্ছিল, তখন এই গণতন্ত্রকামীদের অনেকেই ছিল সেই গণহত্যার সমর্থক। গতকাল যারা সেনা বন্দুকের তলায় কাঁধ পেতে দিয়েছিল, আজ তাদের বুকের দিকেই ঘুরে গেছে বন্দুকের নল। অথচ তারা ভেবেছিল এই বন্দুক দেশপ্রেমী, এই বন্দুক জাতীয়তাবাদী, এই বন্দুক প্রহরী। বিদ্রোহ ও বিচ্ছিন্নতা দমনের কথা বলেই দেশটাকে কবজা করে রেখেছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এখন ওই সব বিদ্রোহী কারেন, কাচিন, শানদের অন্তত নিজস্ব বাহিনী আছে, বর্মিরাই হয়ে পড়েছে নিরস্ত্র। ইটপাটকেলের অস্ত্র আর টিনের বর্ম নিয়ে তারা নেমেছে গণতন্ত্র রক্ষায়।