নন্দীগ্রামে সাবেক এমপি পুত্রের মাথা থেঁতলে দিলো আওয়ামী লীগ কর্মীরা
প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২০, ০০:০০
শোক দিবসের সভাকে কেন্দ্র করে সিংড়া-৩ আসনের সাবেক এমপি ইয়াকুব আলীর পুত্র আশিক ইকবাল (৪৬)কে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মাথা থেঁতলে দিয়েছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এ ঘটনায় সুকাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলার রণবাঘা বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে তিন হামলাকারীকে গণপিটুনি দিয়ে নন্দীগ্রাম থানায় দিয়েছে স্থানীয় জনতা। আটককৃত সিংড়া উপজেলার ১নং সুকাশ ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা গ্রামের হাশেম আলী, মুন্নাফ হোসেন ও রবিউল ইসলাম নামের তিন আওয়ামী লীগ কর্মীকে জনতা আটক করে পুলিশে দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬শে আগস্ট সিংড়ায় ১৫ ও ২১শে আগস্ট নিহত শহীদদের স্মরণসভার আয়োজন করে সিংড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম শফিক। সেই স্মরণসভায় সাবেক এমপির ছেলে আশিক ইকবালের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। এতে সুকাশ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম মো. হাসমত আলীসহ তার নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়।এ ছাড়া সম্প্রতি লক্ষ্মীখোলা গ্রামে আওয়ামী লীগ কর্মী শরিফুলের জমির ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে আব্দুল লতিফের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ সিংড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছে। এরই জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রণবাঘা মাছ বাজারে আশিক ইকবালের ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এ সময় তাকে হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা এবং হাত ও পায়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় পরে স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে হামলাকারী আওয়ামী লীগ কর্মীদের আটক করে পুলিশে দেয়। এ ঘটনায় সাবেক এমপি ইয়াকুব আলীর ছোট ছেলে ইফতেখার আলম বাদী হয়ে ১ নং সুকাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম মো. হাসমত আলীসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৬/৭ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে নন্দীগ্রাম থানায় মামলা করেছে। মামলার বাদী ইফতেখার আলম জানান, স্মরণসভায় আশিক ইকবালের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সিংড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। এর জের ধরেই তারা আশিক ইকবালকে হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা এবং হাত ও পায়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এখন আশিক ইকবালের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুকাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম মো. হাসমত আলী বলেন, তাদের গ্রামে মারধরের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। আটককৃতরা আওয়ামী লীগের কর্মী হলেও আমার লোক না। আমি কোনোভাবেই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। এ বিষয়ে সিংড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, স্মরণসভায় আশিক ইকবালের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। এর জের ধরেই বিতর্কিত কমিটির ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হালিম মো. হাসমত আলী হুকুমে নামধারী আওয়ামী লীগের কর্মীরা এ হামলা করেছে। নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবির বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামি ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার কাজে ব্যবহৃত হাতুিড় উদ্ধার করা হয়েছে।