সিলেটে হাসপাতালে রোগী কমায় স্বস্তি

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

সিলেটে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমছে না। তবে হাসপাতালে রোগী কম। এ কারণে স্বস্তিতে আছেন সবাই। তবে এখনই করোনার জন্য গড়ে তোলা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো বন্ধ করা হবে না। হঠাৎ করে যদি রোগী বেড়ে যায় তাহলে এই হাসপাতালগুলো ব্যবহার করা হবে। করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পোস্টিং দেয়া চিকিৎসক কমিয়ে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। রোববার সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও প্রতিরোধ বিষয়ক সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। বৈঠক সূত্র জানায়- বৈঠকে সিলেটের করোনার সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য মতে- হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এখন আর আগের মতো রোগীর চাপ নেই। এ কারণে সিলেটে এখন ভর্তি হওয়া রোগীরা পরিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। সিলেটের কভিড হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালেও কমে এসেছে রোগীর সংখ্যা। এখন গড়ে প্রতিদিন ৬০-৬৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকছেন। আইসিইউতেও চাপ কমেছে। এছাড়া- করোনা চিকিৎসার জন্য চালু হওয়া খাদিমপাড়া ও দক্ষিণ সুরমা হাসপাতালে রোগী নেই বললে চলে। এ দুটি হাসপাতাল সিলেটে চিকিৎসা সেবা চালু করার পর থেকেই কম রোগী ভর্তি হচ্ছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি ওয়ার্ডেও করোনা চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে একটি ভেন্টিলেশন ওয়ার্ড। ওসমানীতেও করোনা আক্রান্ত রোগীদের তেমন চাপ নেই। এদিকে- হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে আসায় সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের উপরও চাপ কমেছে। বৈঠক  শেষে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান জানিয়েছেন- করোনা চিকিৎসা নিয়েই মূলত এই বৈঠক ছিলো। বৈঠকে সামগ্রিক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা কমে আসায় স্বস্তি প্রকাশ করা হয়। তবে- এখনই সব গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে না। করোনা চিকিৎসার জন্য যেসব আয়োজন করা হয়েছে সবই থাকছে। চিকিৎসকদের বসিয়ে না রেখে সাধারন চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখার উপর জোর দেয়া হয়েছে। এদিকে- করোনা চিকিৎসার জন্য প্রশংসিত হয়েছে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। এই হাসপাতালই সিলেটবাসীর একমাত্র ভরসা ছিলো। হাসপাতালে ইতিমধ্যে কয়েক’শ রোগী করোনা চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। হাসপাতালের আইসিইউতে করোনা রোগীদের নিয়ে অবিরাম লড়াই করছেন চিকিৎসকরা। এই হাসপাতালে মৃত্যুর সংখ্যা কম। ফলে গতকালের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে হাসপাতালের চিকিৎসক সহ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়। এই হাসপাতালটি করোনার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে থাকবে বলে বৈঠকে ঘোষণা দেন সচিব লোকমান হোসেন মিয়া। এদিকে- স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে-  সিলেটে গতকাল একদিনে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন আরও ৭০ জন। আর ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন দুই জন। শনাক্ত হওয়া ৭০ জনের মধ্যে সিলেট জেলায় ৪৭, সুনামগঞ্জে ৫ ও হবিগঞ্জে ১৮ জন। আর মৃত দুজনের একজন সিলেট জেলার এবং অন্যজন সুনামগঞ্জের। গতকালের ৭০ জনকে নিয়ে সিলেটে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯,২৯৯। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৪৪২ জন। সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগে মোট আক্রান্ত ৯২৯৯ জনের মধ্যে সিলেট জেলায় ৪৯৫৯, সুনামগঞ্জে ১৭৪৮, হবিগঞ্জে ১৩৭২ ও মৌলভীবাজার জেলায় ১২২০ জন। সিলেট অঞ্চলে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আজ পর্যন্ত ভর্তি আছেন ১৫৯ জন। এর মধ্যে সিলেটে ৬৩, সুনামগঞ্জে ১৬, হবিগঞ্জে ৫৮ ও মৌলভীবাজারে ২২ জন।  সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৪০ জন। এর মধ্যে সিলেটে ১৪, সুনাগঞ্জে ১৬, হবিগঞ্জে ২ ও মৌলভীবাজারে ৮ জন। আর এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪৪৪২ জন। এর মধ্যে সিলেটে ১৪৯১ সুনামগঞ্জে ১৩১৬, হবিগঞ্জে ৮৯৩ ও মৌলভীবাজারে ৭৪২ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে অবস্থান করছেন ৫৯৫ জন। এর মধ্যে সিলেটে ৩৪৮, সুনামগঞ্জে ১০৯, হবিগঞ্জে ৪১ ও মৌলভীবাজারে ৯৭ জন। সিলেট বিভাগে গতকাল করোনা কেড়ে নিয়েছে আরও দুইজনের প্রাণ। এদের একজন সিলেট জেলার এবং অপরজন সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে সিলেটে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬৯। এর মধ্য সিলেটে ১২২, সুনামগঞ্জে ১৯, হবিগঞ্জে ১১ ও মৌলভীবাজারে ১৭ জন।নর্থইস্টে ৩ জনের মৃত্যু: সিলেট দক্ষিণ সুরমার নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একদিনেই করোনায় মারা গেলেন মৌলভীবাজারের তিনজন। এর মধ্যে একজন মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নোমান। হাসপাতালের করোনা চিকিৎসার সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. নজমুল ইসলাম জানিয়েছেন- শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মো. নুরুল আলম নোমানের মৃত্যু হয়। তিনি সর্দি, কাশি, জ্বর ও হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, পেটের সমস্যাসহ অনেকগুলো রোগে ভুগছিলেন। তার বাসা মৌলভীবাজার পৌর শহরের সুলতানপুর এলাকায়। একই রাত ১২টা ২০ মিনিটে নর্থ ইস্ট হাসপাতালে দেবেশ রঞ্জন দত্ত (৬৫) এবং রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাঞ্চন চক্রবর্তী শ্যামল (৭৪) নামে আরও দুই ব্যক্তি মারা যান। তাদের দু’জনের বাড়ি শ্রীমঙ্গল উপজেলার শহরতলীর সবুজবাগ আবাসিক এলাকায়।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us