You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ঈশ্বরের ইচ্ছা আমি মেনে নিয়েছি, তুমি কাঁদছ কেন : এন্ড্রু কিশোর

ক্যান্সারে আক্রান্ত প্লেব্যাক সম্রাট কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল ৫ জুলাই দুপুর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাউর হতে থাকে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। কিন্তু এর সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে জানা যায়, বেঁচে আছেন সবার প্রিয় এই গায়ক। মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ায় বিরক্ত এন্ড্রু কিশোরের পরিবার। তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু জানান, শিল্পীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃত্যুর আগে কিংবদন্তিকে মৃত ঘোষণা না করতে অনুরোধ জানিয়ে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। গতকাল ৫ জুলাই ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি এন্ড্রু কিশোরের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। সেখানে শিল্পীর বর্তমান শারীরিক অবস্থাসহ আবেগমাখা অনেক কথাই লিখেছেন লিপিকা। তিনি লেখেন, ‘অনেকেই ভাবছেন এটা আসল না নকল। আসল যারা ভেবেছেন তাদের জন্য শুভকামনা। প্রথম যে পোস্ট দুইটা দেয়া হয়েছে সেটা এন্ড্রু কিশোরের কথা। আমি শুধু মাত্র লিখেছি। আমি কিশোরের বউ। এখন আমি কিছু বলবো। গত বছর, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, আমরা সিঙ্গাপুর গিয়েছিলাম। সেখানে কিশোরের ধরা পরে Diffuse Large B Cell Lymphoma (cancer in both Adrenal Gland)। তারপর কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি শেষ হয় এপ্রিল মাসে। ডাক্তার বলেন এখন আর কোন কিছুর দরকার নাই। মেডিসিন দিয়ে বলেন আগস্ট মাসে আসতে। আমরা ১৩ মে দেশে আসার জন্য টিকিট কাটি, কিন্তু কিশোর ভয় পাই। কারণ সে শারীরিকভাবে খুব দুর্বল ছিল। আমি টিকিট বাতিল করি। ডাক্তার বলেন, এটা কেমোর জন্য, আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে, সময় লাগবে। পরে ১০ জুন আবার টিকিট কাটি। কিন্তু হঠাৎ ২ জুন কিশোরের হালকা জ্বর আসে। ৩ জুন রাতে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। ৪ জুন হাসপাতালে ভর্তি করেন ডাক্তার। কিন্তু জ্বর বারবার আসতে থাকে। কোনো মেডিসিন তার শরীরে কাজ করছিল না। হাসপাতালের ডাক্তার আমাকে ফোন করে বলেন, পেট স্ক্যান করতে হবে, লিম্ফোমা আবার ব্যাক করেছে কিনা দেখতে হবে। আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম, মনে মনে শুধু ঈশ্বরকে ডেকেছি। কারণ শুরুতে ডাক্তার বলেছিলেন, লিম্ফোমা যদি একবারে নির্মূল না হয়, যদি আবার ফিরে আসে তাহলে সেটা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে আসে। আর খুব দ্রুত ছড়ায় এবং সেটা কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। ৯ জুন পেট স্ক্যান হয় এবং সেদিন রাতে ডাক্তার আমাকে ফোন করে বলেন যে, পরদিন মানে ১০ জুন সকাল ১০ টায় আমার সাথে রিপোর্ট নিয়ে আলাদা করে কথা বলতে চান। ৯ জুন রাতটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রাত। আমি সারারাত ঘুমাতে পারিনি। সকাল ১০টার আগে হাসপাতালে গিয়ে বসে থাকি কিশোরের পাশে। কিশোর আমাকে বলল, ডাক্তারকে বলবা, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিতে, আমরা দেশে ফিরবো। আমি ভয়ে চুপ করে বসে আছি, শুধু বললাম দেখি ডক্টর লিম কি বলেন। কিছুক্ষণ পরে একজন নার্স এসে আমার হাত ধরে টেনে বাইরে নিয়ে গেল, বলল ডাক্তার ডাকছে। ডক্টর লিম আমার সামনে এসে একটাই কথা বলল লিম্ফোমা ব্যাক করেছে। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি, কোন কথা বলতে পারছিলাম না, বুঝলাম সব শেষ । ডাক্তার বললেন, এন্ড্রুকে বলব? আমি বললাম, বলতে তো হবে। ডাক্তার আমাকে কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে নিয়ে গেলেন এবং দেখালেন। অ্যাড্রেনাল গ্ল্যান্ডে কিছু নাই কিন্তু লিম্ফোমা ভাইরাস ডান দিকের লিভার এবং স্পাইনালে ছড়িয়ে গিয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অল্প অল্প আছে। আমি কোনো কথা বলতে পারছিলাম না। চোখের জল ঠেকাতে পারছিলাম না, অনেক কষ্টে ডাক্তারকে বললাম এখন কী করবো। ডাক্তার বললেন ‘আই এম সরি। আমার আর কিছুই করার নাই।’ আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি। চোখ দিয়ে অঝোরে জল পড়ে যাচ্ছে। নিজেকে এত অসহায় লাগছিল যে, কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। কিশোর বুঝতে পেরেছিল, আমাকে ডাকতে থাকে। ডাক্তার কিশোরকে বলে লিম্ফোমা ব্যাক করেছে। কিশোর ডাক্তারকে বলে, তুমি আজই আমাকে রিলিজ করো, আমি আমার দেশে মরতে চাই, এখানে না, আমি কাল দেশে ফিরবো। আমাকে বলে, আমি তো মেনে নিয়েছি, সব ঈশ্বরের ইচ্ছা, আমি তো কাঁদছি না। তুমি কাঁদছ কেন? কিশোর খুব স্বাভাবিক ছিলো। মানসিকভাবে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল। যেদিন থেকে জ্বর এসেছিল সেদিন থেকে। কিশোর হাই কমিশনে ফোন করে বলে, কালই আমার ফেরার প্লেন ঠিক করে দেন। আমি মরে গেলে আপনাদের বেশি ঝামেলা হবে। জীবিত অবস্থায় পাঠাতে সহজ হবে। ১০ জুন বিকেলে হাসপাতাল থেকে ফিরি এবং ১১ জুন রাতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দেশে ফিরে আসি আমরা।’ লিপিকা আরও লেখেন, ‘ঈশ্বরের কি খেলা, ১০ জুন আমরা সম্পূর্ণ পজিটিভ রেজাল্ট নিয়ে ফিরতে চেয়েছিলাম। অথচ ১১ জুন ফিরলাম পুরো নেগেটিভ রেজাল্ট নিয়ে। আমি ডাক্তারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম আর কতদিন। সে এটা লিখেছিল ‘It's difficult to predict but typically in terms of months rather than years।’ এন্ড্রু কিশোরের বর্তমান অবস্থা জানিয়ে লিপিকা লিখেছেন, ‘এখন কিশোর কোনো কথা বলে না। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে। আমি বলি কি ভাবো, বলে কিছু না। পুরনো কথা মনে পড়ে আর ঈশ্বরকে বলি আমাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও, বেশি কষ্ট দিও না।’ ক্যান্সারের লাস্ট স্টেজ খুব যন্ত্রনাদায়ক ও কষ্টের হয়। এন্ড্রু কিশোরের জন্য সবাই প্রাণ খুলে দোয়া করবেন, যেন কম কষ্ট পায় এবং একটু শান্তিতে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যেতে পারে। আমার মনে হল, কিশোর শুধু আমার বা আমাদের সন্তানের বা আমাদের পরিবারের নয় বরং দেশের মানুষের একটা অংশ বা সম্পদ।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন