টানা ১০১ দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুললো মান্নাদের স্মৃতিবিজড়িত কলকাতার বই পাড়ার কফি হাউস। বাঙালির চিরন্তন আড্ডার জায়গা বর্তমানে খোলা থাকছে বেলা ১১টা থেকেই সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
স্বল্প সময়ের জন্য খুললেও চলমান করোনাকালে স্বাভাবিক হয়নি কফি হাউজের আড্ডা। অন্তত সরকারি স্বাস্থ্যবিধির বন্দোবস্তে তেমনটাই ধরা পড়েছে। নোটিশ বোর্ডের ধার ঘেঁষে প্লাস্টিকের সারি সারি চেয়ার জড়ো করা। কাঠের চৌকো বেশ কিছু টেবিলও এক কোণে জড়ো করে রাখা হয়েছে। শুধু নিচতলার মধ্যের অংশটার মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মাত্র ২৫টি টেবিল। প্রতিটা টেবিলের সঙ্গে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মেনে চারটি করে চেয়ার রাখা হয়েছে। এর বাইরে চাইলেও বাড়তি চেয়ার, টেবিলের সঙ্গে সংযোগ করা যাবে না। ফলে গোল করে ১০-১২ জনের একসঙ্গে বসার সুযোগ আপাতত নেই।
কর্তৃপক্ষের কড়া নির্দেশ, মানতে হবে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব।কাচের গ্লাসে পানি, স্টিলের চামচ, চিনেমাটির সাদা কাপপ্লেট আপাতত বন্ধ। করোনার সংক্রমণ এড়াতে তার বদলে আনা হয়েছে প্লাস্টিকের ওয়ান টাইম গ্লাস, চামচ ও কাগজের কাপপ্লেট। এমনকি চিলি বা টমেটো সস দেওয়া হচ্ছে পাউচে। টেবিলের মেনু কার্ডের বদলে প্রিন্ট করা হয়েছে মেনু লিস্ট। আর তা শোভা পাচ্ছে ক্যাশ কাউন্টারের দেওয়ালে। আপাতত পাওয়া যাচ্ছে চা, কফির সঙ্গে পকোড়া, স্যান্ডউইচ, ওমলেট, বাটার টোস্ট। বাকি চাউমিন, মোগলাই, কাটলেট, ফিশ চপসহ ভিন্ন ধরনের পদ পরবর্তী পর্যায়ে বিবেচনা করে রাখা হবে বলে, জানিয়েছে ইন্ডিয়ান কফি হাউস ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি। তবে আপাতত ওপরের ফ্লোর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সোসাইটির সম্পাদক তপন পাহাড়ির বলেন, সবকিছুই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) থেকে খুললেও এখনো আগের মতো মানুষজন আসছেন না। তার ওপর কলকাতায় করোনা বেড়েই চলেছে। আবার দীর্ঘদিন বন্ধ রাখলে বিক্রিবাট্টা না হলে তখন কর্মচারীদের বেতন দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার থেকে কফি হাউজের দরজা খুললেও শনিবারেও (৪ জুলাই) সেরকম জমজমাট চোখে পড়লো না। প্রবেশদ্বারে কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট লিখে দিয়েছেন, ‘নো মাস্ক, নো এন্ট্রি’। ভেতরে প্রবেশ করতে হলে দ্বারক্ষীর কাছে থার্মাল গানে পরীক্ষা দিতে হবে শরীরের তাপমাত্রা। স্যানিটাইজার দ্বারা হাত হতে হবে জীবাণুমুক্ত।