রাফি স্কুল থেকে ফিরেই ভিডিও গেমস খেলা শুরু করে। পড়ার ফাঁকে সুযোগ পেলেই সে কম্পিউটার চালু করে একটু গেম খেলে নেয়। রাফি শুধু ভাবে, এমন যদি হতো, ভিডিও গেম খেললে কেউ বকবে না। এমনকি স্কুলেও খেলতে দেওয়া হতো ভিডিও গেমস। কত ভালোই না হতো! হয়তো রাফির মতো ছেলেমেয়েদের কথা ভেবেই পোল্যান্ড সরকার নিল দারুণ একটি পদক্ষেপ। প্রথমবারের মতো ভিডিও গেমকে অ্যাকাডেমিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তার মানে বাচ্চারা এখন ভিডিও গেম পড়বে!
ভিডিও গেমের পরীক্ষা দেবে! পোল্যান্ডের শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘দ্য ওয়ার অব মাইন’ নামক ভিডিও গেমটি সিলেবাস হিসেবে বাধ্যতামূলক করেছে। গেমটি পোলিশ গেম ডেভেলপার কোম্পানি ‘১১ বিট স্টুডিও’র তৈরি করা একটি যুদ্ধভিত্তিক গেম। এটি অন্যান্য যুদ্ধের গেম থেকে অনেকটাই আলাদা। প্রথম সারির যোদ্ধাদের বদলে এই গেম খেলতে হয় সাধারণ নাগরিক হিসেবে। ১৯১২ সালে সংঘটিত বলকান অঞ্চলের যুদ্ধ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানানো হয় এই গেম। যেখানে মূল লক্ষ্য যোদ্ধা হিসেবে শুধু যুদ্ধ করাই নয়, বরং খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করে যুদ্ধে ভিন্নভাবে নিজের অবদান রাখা। শিক্ষার্থীদের সামাজিকতা, নৈতিকতা ও ইতিহাস শিক্ষার উদ্দেশ্যে গেমটি ফ্রি সরবরাহ করার ঘোষণা দেয় ইউরোপিয়ান ভিডিও গেম ইন্ডাস্ট্রির সদস্য স্পাইডর।
সৃজনশীলতা, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় ভিডিও গেমের উপকারিতা বুঝে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্পাইডরের প্রধান ডমিনিকা উরবানিস্কা বালানচাক। ইউরোপিয়ান ভিডিও গেম ইন্ডাস্ট্রির প্রধান সাইমন লিটল পোল্যান্ড সরকারের এই পদক্ষেপে বেশ খুশি হয়েছেন। তিনি মনে করেন, একবিংশ শতাব্দীতে শিক্ষাক্ষেত্রে ভিডিও গেমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেখানে বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের কার্যক্রমগুলোয় উৎসাহ পায় না, সেখানে এই কৌশল শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আরও উৎসাহ জাগাবে এবং তাদের সৃজনশীল করে তুলবে। পোল্যান্ডে প্রথমবারের মতো শিক্ষাক্ষেত্রে ভিডিও গেম বাধ্যতামূলক করলেও সুইডেন ও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়াশোনায় আগেই ভিডিও গেম যুক্ত হয়েছিল।