অভিনয় নিয়ে তো কোনও কথাই হবে না, সৌন্দর্যেও বিদ্যুৎরেখা ভানুরেখা গণেশন। কিন্তু প্রেমভাগ্য রীতিমতো গ্রহণ লাগা। যতবার প্রেমে পড়েছেন হয় প্রেম ভেঙেছে, নয়তো বিবাহিত পুরুষ তার জীবনে এসেছেন। অমিতাভ বচ্চন-রেখার প্রেম বলিউডি প্রেমের জলসার মধ্যমণি। তুলনায় কম আলোচিত বিনোদ মেহরা-রেখার প্রেম। জয়ার চোখের পানি অমিতকে তখন একটু একটু করে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে রেখার থেকে। ঋষি কাপুর-নীতু সিংহের বিয়ের রাতে রেখা যতই সিঁথিতে সিঁদুররেখা টেনে সিমন্তিনী সাজুন, বিগ বি’র ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করুন, তার কাছে ঘেষতে চান, অমিত কিন্তু ততদিনে পরিযায়ী প্রেম সেরে আবার সুরক্ষিত বাসায় ফিরে গিয়েছেন।
অমিত যেতেই রেখা আবার একা। নিশিদিন জ্বলছেন, পুড়ছেন বিরহের তাপে। কিন্তু আগুন নেভানোর মতো কাউকেই পাচ্ছেন না। সেই সময় বিনোদ মেহরা যেন দেবদূত হয়ে ধরা দিলেন অভিনেত্রীর জীবনে। ১৯৭৮ সালে মানিক চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘ঘর’ রেখার চোখে আরও একবার সুখী সংসারের ছবি এঁকে দিল। কোনও দিকে না তাকিয়ে রেখা চোখ বুজে আবার প্রেমে পড়লেন ছবির নায়ক বিনোদ মেহরার। কিন্তু এই নায়কও যে বিবাহিত! রেখার মনে যখন প্রেমের নেশা তাকে ঠেকানোর সাধ্যি কোন পুরুষের থাকে? বিনোদও পারেননি। ফলে, প্রেম এল দুদ্দাড়িয়ে। অমিতের ছেড়ে যাওয়া রেখা তখনও ভোলেননি। এবার তাই তড়িঘড়ি প্রেমিককে নিয়ে কলকাতায় চলে এলেন নায়িকা।
কালীঘাটে দেবী কালিকাকে সাক্ষী রেখে বিয়ে সেরে নিলেন সবার আগে। যাতে অমিতের মতো বিনোদও তাকে ফাঁকি দিতে না পারেন! কিন্তু যার প্রেম আর বিয়ের ঘরে রাহু-কেতু-শনির দশা তার কপালে এত সহজে সুখ মেলে? বিয়ে সেরে রেখা বিনোদের হাত ধরে চললেন শ্বশুরবাড়ি। দু’জনেরই ধারণা ছিল, জোড়ে দেখলে পরিবার তাদের ফেলতে পারবে না। কিন্তু সে গুড়ে বালি! লিফটে করে বিনোদের ফ্ল্যাটে পৌঁছে ডোর বেল বাজাতেই মুখোমুখি শাশুড়ি। শাড়ির আঁচল ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিচু হয়ে রেখা যেই পা ছুঁতে গেলেন অমনি ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিলেন বিনোদের মা! তার পর অবিশ্রান্ত গালিগালাজ আর গায়ে হাত! কিংকর্তব্যবিমূঢ় রেখা তখনও দরজায় দাঁড়িয়ে। পাশে মাথা নিচু করে বিনোদ মেহরা। এর পরেও রেখা যাচ্ছেন না দেখে, শেষে জুতা খুলে রেখাকে গায়ে বসিয়ে দিলেন তিনি।