ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ও ইউটিউবে প্রদর্শিত নাটক সম্পর্কে বিশিষ্টজনদের অভিমত

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২০, ১৫:২০

ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ও ইউটিউবের কনটেন্ট প্রদর্শনের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সৈয়দ হাসান ইমাম, মুস্তাফা মনোয়ার, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, আলী যাকের, আবুল হায়াত, দিলারা জামান, আসাদুজ্জামান নূর, এ টি এম শামসুজ্জামান, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হারুন–অর–রশীদসহ দেশের বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। সেখানে তাঁরা মতামত দিয়েছেন, সম্প্রতি ওয়েবসাইট ও ইউটিউবে প্রদর্শিত কিছু নাটক বাঙালির চিরন্তন সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে আঘাত হানতে শুরু করেছে।

বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, প্রযুক্তির উত্তরোত্তর আধুনিকতার ফলে টেলিভিশন চ্যানেল ছাড়াই অন্যান্য মাধ্যমে, যেমন ইউটিউব, ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে নিয়ন্ত্রণ বা বর্জন করার পক্ষপাতি নন তাঁরা। ‘বিভিন্ন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রদর্শিত নাটক সম্পর্কে দেশের বিশিষ্টজনদের অভিমত’ শিরোনামের বিবৃতিটি হুবহু তুলে ধরার অনুরোধ করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তাঁদের অভিমত, এতে করে তাঁদের পুরো বক্তব্য স্পষ্ট হবে সবার কাছে। নিম্নে সেটি তুলে ধরা হলো: অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, অনেক দিন ধরে কিছু ইউটিউব ও ওয়েব প্ল্যাটফর্মে অত্যন্ত দায়িত্বহীনতার সঙ্গে কিছু নির্মাতা, প্রযোজক, নাট্যকার ও অভিনয়শিল্পী কুরুচিপূর্ণ নাটক পরিবেশন করে আসছে। এই নাটকগুলোর মধ্যে কাহিনির প্রয়োজনে নয় একেবারেই বিকৃত রুচিসম্পন্ন নাটক নির্মাণ করে বিবেকবান ও সচেতন দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আমরা এহেন কাজকে তীব্রভাবে ভর্ৎসনা করি, নিন্দা জানাই।

বাংলাদেশের টেলিভিশনের নাটক জন্মলগ্ন থেকেই পারিবারিক বিনোদনমাধ্যম হওয়ায় দর্শকের রুচি ও মূল্যবোধ নির্মাণে ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন আসার পর কিছু প্রতিভাবান নাট্যকার, পরিচালক, অভিনেতা–অভিনেত্রী ও কলাকুশলী বাংলাদেশের এই মাধ্যমকে এক নতুন মহিমায় স্থাপন করেছিল। কিন্তু কিছু কিছু চ্যানেলে নাটকের মান এমনভাবে নেমে এসেছে যে বাংলাদেশের নাটক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেক দর্শক। এর মধ্যেও কিছু ব্যতিক্রমী চ্যানেলে পরিচালকগণ কিছু ভালো কাজ করার তাগিদও অনুভব করেছে।

যার প্রতিফলন আমরা প্রায়শই চ্যানেলগুলোতে দেখতে পাই। কিন্তু এর মধ্যে আবার অনলাইন প্রচারমাধ্যমগুলোতে অবাধ প্রচারের সুযোগে যৌনতা এবং ভায়োলেন্সকে উপজীব্য করে অশ্লীলতাকে আশ্রয় করেছে। সম্প্রতি সেই সব নাটক ওয়েবসাইট ও ইউটিউবে প্রদর্শিত হয়ে বাঙালির চিরন্তন সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে আঘাত হানতে শুরু করেছে। এর আগে ভাষাকে বিকৃত করার মাধ্যমে কিছু পরিচালক নাটক নির্মাণ করায় জনরোষে পতিত হয় এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনায় কিছুটা প্রশমিত হয়।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকার একটি সম্প্রচার নীতিমালা প্রকাশ করে যেখানে বিষয়গুলো সম্পর্কে নির্দেশনা রয়েছে। আশির দশকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার প্রবণতার ফলে দর্শক সিনেমা বর্জন করেছিল। একইভাবে দর্শক যদি আমাদের নাটক বর্জন করতে থাকে, তাহলে তা হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রযুক্তির উত্তরোত্তর আধুনিকতার ফলে আমরা টেলিভিশন চ্যানেল ছাড়াই অন্যান্য মাধ্যমে সংযুক্ত হতে পারছি (যেমন ইউটিউব, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম)। আমরা এসবকে নিয়ন্ত্রণ বা বর্জন করার পক্ষপাতী নই। আমরা শিল্পীর স্বাধীনতা ও ভিন্নমতে বিশ্বাসী। কাহিনির প্রয়োজনে কোনো শিল্পিত উপস্থাপনার খবরদারিতে আমরা বিশ্বাস করি না।

কিন্তু অপ্রয়োজনে শুধু দর্শক টানার মিথ্যা প্রলোভন আমাদের নাটক শুধুই বিনোদনের পণ্য হয়ে দাঁড়াক তা–ও চাই না। এটিও উদ্বেগের বিষয় যে ওয়েব বা এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে নাটক পাইরেসি হয়ে অন্যত্র চলে যায় এবং খণ্ডিতভাবে প্রকাশ হলে বিভ্রান্তি ছড়ায়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। করোনা–পরবর্তী সময়ে শৈল্পিক উপস্থাপনায় নতুন অভিজ্ঞতায় উজ্জীবিত থেকে আমাদের শিল্প এক নতুন অভিধা সৃষ্টি করবে।

রাষ্ট্র, আইন, সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ নয়, শিল্পীর নিজস্ব অভিব্যক্তি হবে প্রধান বিষয়। শিল্পী–কলাকুশলীদের পাশে দাঁড়াবার জন্য আমাদের সংগঠন। শিল্প এবং শিল্পীর ওপর যদি কোনো অন্যায় আঘাত আসে তার পাশে অবশ্যই দাঁড়াবে। এমতাবস্থায় নাট্যকার, পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রী, কলাকুশলী—সবাইকে সুস্থ ও শৈল্পিক বিনোদনের প্রক্রিয়ায় আসার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us