তিব্বত হলো হাতের তালু আর তাতে পাঁচটি আঙুল লাদাখ, নেপাল, ভুটান, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশ। হিসাবটা অদ্ভূত, তবে উদ্ভট নয়। এই হিসাব করেছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন মাও সে তুং। চীন যখন তিব্বত দখল করল, তখন মাও-সহ অন্য নেতারা বলেছিলেন, তিব্বত হল হাতের তালু, যা আমাদের দখল করতেই হত। এরপর আমরা বাকি পাঁচ আঙুল বাড়াবো। প্রথম আঙুলটি হল লাদাখ। বাকি ৪টি আঙুল হল নেপাল, ভুটান, সিকিম ও অরুণাচলপ্রদেশ। এগুলোর মধ্যে নেপাল ও ভুটান স্বাধীন দেশ।বাকিগুলো ভারতের প্রাদেশিক রাজ্য।
এটা অবশ্য কখনো সরাসরি প্রকাশ করেনি চীন। তবে এখন ভারতের কাছ থেকে লাদাখ ছিনিয়ে নিতে তাদের হাঁক ডাক দেখে তিব্বতের প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী লবসাং সাংগে প্রমাদ গুনছেন। তার ধারণা, চীন তাদের ‘পাঁচ আঙুল নীতির সম্প্রসারণ ঘটাতে যাচ্ছে লাদাখের মধ্য দিয়ে। এরই মধ্যে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা দখল করে নিয়েছে তারা। চীনের এ তোড়জোড় দেখে ভারতকে সতর্ক করলেন সেন্ট্রাল তিব্বত অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান লবসাং সাংগে।
চীনের পরিকল্পনা ফাঁস করে তিনি বলেন, ডোকলামে চীনা আগ্রাসন একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ মাত্র ছিল। সে কথাই গত ৬০ বছর ধরে তিব্বতি নেতারা নয়াদিল্লির নীতিনির্ধারকদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। পূর্ব লাদাখে ওই উপত্যকায় ভারতীয় ভূখণ্ড রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয়েছে ২০ ভারতীয় সেনা। তারপর থেকেই লাগাতার আলোচনা চলছে দু’দেশের মধ্যে। তবে বিবাদ কিছুতেই মিটছে না। এখনও গালওয়ানে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে লাল ফৌজ।
সিএনএন-নিউজ১৮- কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লবসাং সাংগে বলেন, লাদাখ সীমান্তে চীনের কার্যকলাপ কিন্তু চীনের ‘ফাইভ ফিঙ্গার স্ট্র্যাটেজি’র অংশ। যে স্ট্র্যাটেজি শুরু করেছিলেন পিপলস রিপাবলিক অব চায়না’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মাও সে তুং।
২০১৭ সালের ডোকলাম স্ট্যান্ড অফ প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, লাদাখে এই হামলাও সেই ফাইভ ফিঙ্গার স্ট্র্যাটেজিরই অংশ। তিব্বতের নেতারা ভারতকে গত ৬০ বছর ধরে এটাই সতর্ক করে আসছেন। নেপাল, ভুটান ও অরুণাচলের উপরেও চাপ রয়েছে। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর থেকে এই প্রথম গোটা গালওয়ান ভ্যালির উপরে প্রথম নিজেদের আধিপত্য দাবি করল চীন। শান্তিপূর্ণ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পড়ল লাশের স্তূপ।